করোনায় নরসিংদীর প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন

করোনাভাইরাসে নরসিংদীর প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি ১০ দিন আইসোলেশনে থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা তাঁকে সুস্থতার ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেন। ৬ এপ্রিল রাতে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন।
জেলা করোনা প্রতিরোধ জরুরি সেলের প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ইমরুল কায়েস প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ওই ব্যক্তির বাড়ি নরসিংদীর পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়নে। তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। পাঁচ–ছয় দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডার সন্দেহ থেকে নিজেই নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
জেলা করোনা প্রতিরোধ জরুরি সেল সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ওই পোশাক কারখানায় কর্মরত পাঁচজন ব্যক্তি মিলে একটি বাসায় থাকতেন। তাঁদের মধ্যে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ১ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে নরসিংদীতে ফেরেন তিনি। পাঁচ–ছয় দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডা থাকায় নিজেই প্রথমে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ওষুধপথ্য দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরদিন নিজেই নমুনা পরীক্ষা করাতে আইইডিসিআরে গেলে তাঁকে পরীক্ষা না করিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নমুনা পরীক্ষা করে আসেন। এই নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তাঁকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করা হয়।
৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই ব্যক্তির বাড়িসহ পুরো এলাকাটি লকডাউন করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা আলী। বাড়ির পাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়, যাতে কেউ ওই বাড়ির আশপাশে যেতে না পারে। পাশাপাশি ওই পরিবারের সব সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। পরদিন দুপুরে তাঁকে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া তাঁর পরিবারের ৯ সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে রাখার পাশাপাশি তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে আইইসিডিআরে পাঠানো হয়। তাঁদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার নাজমুল হক জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জেলার প্রথম ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এরই মধ্যে পরপর দুবার নমুনা সংগ্রহ করে আইইসিডিআরে পাঠানো হলে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাই তাঁকে করোনামুক্ত ঘোষণা দিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা আলী জানান, করোনামুক্ত হওয়ায় তাঁর বাড়ির লকডাউন তুলে নেওয়া হবে। তারপরও ঝুঁকি এড়াতে পরিবারটির কেউ যেন বাইরে বের না হয়, সেদিকে কড়া নজরদারি রাখা হবে।