বরগুনায় জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়ম, তদন্তের নির্দেশ

বরগুনা
বরগুনা

চাল বিতরণে অনিয়ম হয়েছে মর্মে বরগুনার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলেরা। সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলেরা এই অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর এই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সে সময় জেলেরা চাল কম দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিন জেলেকে পিটিয়ে আহত করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে জেলেরা উল্লেখ করেছেন, ২৯ মার্চ বরগুনা সদর উপজেলার ১০ নম্বর নলটোনা ইউনিয়নের জেলেদের মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। প্রত্যেক জেলেকে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসে ৮০ কেজি চাল দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রত্যেক জেলেকে ৩০ কেজি করে ৬০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলের দুই মাসের ২০ কেজি করে চাল চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন। জেলে তালিকায় যাঁদের নাম আছে, তাঁদের সবাই আবার চাল পাননি। প্রকৃত জেলেদের নাম বাদ দিয়ে যারা মাছ শিকারের সঙ্গে যুক্ত না—এমন ব্যক্তিদের নামও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অভিযোগ তদন্ত করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বরগুনাসহ দেশের সব উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে এখন মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা আছে। এ সময় সরকারি খাদ্য সহায়তা হিসেবে ভিজিএফের এই চাল বিতরণ করা হয়।

গর্জনবুনিয়া এলাকার জেলে আবদুল্লা বলেন, 'দুই মাসে আমাদের ৮০ কেজি চাল দেওয়ার কথা বলেছে সরকার। ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণের সময় আমাকে চাল দেওয়া হয়নি। ১২ এপ্রিল চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে ৬০ কেজি চাল দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় বিকল্প কর্মসংস্থান নেই। এর মধ্যে আবার ২০ কেজি চাল কম দিয়েছে। এখন সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের।'

একই এলাকার জেলে ছগির হোসেন ও হানিফের নাম আছে জেলে তালিকায়। তবুও তাঁরা সহায়তার চাল পাননি। তাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের চাল দেওয়া হয়নি। অথচ এমন অনেককে চাল দেওয়া হয়েছে যাঁরা জেলে নন এবং চেয়ারম্যানের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত।

চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে নলটোনা ইউপির চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির বলেন, ‘আমার এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। আমার শত্রুপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ করছে। শুনেছি অভিযোগের তদন্ত চলছে। আমি তালিকা অনুসারে জেলেদের মধ্যে দুই মাসের জন্য ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছি। এসব অভিযোগ মিথ্যা।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলেদের সরকারি সহায়তার চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্তের জন্য সদরের ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’