মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের সাত কিলোমিটার পদযাত্রা

মজুরির দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কালিটি চা-বাগানের শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ। আজ রোববার উপজেলা সদরের নবীন চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় চৌমোহনা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
মজুরির দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কালিটি চা-বাগানের শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ। আজ রোববার উপজেলা সদরের নবীন চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় চৌমোহনা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে অবস্থিত কালিটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা মজুরির দাবিতে আজ রোববার বাগান থেকে উপজেলা সদর অভিমুখে প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকা পদযাত্রা করেছেন। এ সময় তাঁরা উপজেলা সদরের নবীন চন্দ্র মডেল উচ্চবিদ্যালয় চৌমোহনায় প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারা গিয়ে এ ব্যাপারে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা ফিরে যান। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল একই দাবিতে তাঁরা বাগানে ‘ভুখা’ মিছিল করেন।

চা-শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বাগান এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। এ সময় মজুরির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা একটার দিকে সাত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে শ্রমিকেরা উপজেলা সদরের নবীন চন্দ্র মডেল উচ্চবিদ্যালয় চৌমোহনায় পৌঁছান। সেখানে তাঁরা সড়কে বসে পড়ে অবরোধের সৃষ্টি করেন। এ সময় চারটি সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে।

অবরোধ চলাকালে সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন কালিটি বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শম্ভু দাশ, সম্পাদক উত্তম কালোয়ার, শ্রমিকনেতা দয়াল অলমিক, শ্রমিক পরিবারের সন্তান মোহন রবিদাস প্রমুখ।

শ্রমিকেরা জানান, কালিটি বাগান ‘জোবেদা টি কোম্পানি লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। এ বাগানে ৫৩৭ জন শ্রমিক রয়েছেন। প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক ১০২ টাকা করে মজুরি পান। প্রতি সপ্তাহে তা পরিশোধের কথা। কিন্তু ১২ সপ্তাহ ধরে কাজ করেও শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় শ্রমিকেরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

অবরোধ চলাকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সফি আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে বাগানে ফিরে যান।

ইউএনও এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, বাগানের মালিকপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ইতিমধ্যে বাগানের ৫০০ শ্রমিককে সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কিছুদিনের মধ্যে বাগানের সব শ্রমিককে এককালীন পাঁচ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।

১২ সপ্তাহের মজুরি পরিশোধে বিলম্বের কারণ সম্পর্কে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দেবের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।