রাঙামাটিতে প্রস্তুত হচ্ছে কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র, এলাকায় উদ্বেগ

বিদেশে আটকা পড়া রাঙামাটির দুই শতাধিক ব্যক্তিকে শিগগিরই দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। তাঁদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন হিসেবে প্রস্তুত হচ্ছে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। এ খবরে আশপাশের তিন গ্রামে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে অনেকে গ্রাম ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের শুকরছড়িতে অবস্থিত কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। ২২ ও ২৩ এপ্রিল বিশেষ বিমানে করে আটকা পড়া ওই ব্যক্তিদের ফেরত এনে এখানে রাখা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছেন অনেক বাংলাদেশি। এ ছাড়া ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে আটকে পড়েছেন অনেকে। দেশে ফিরতে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আটকা পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে শুধু রাঙামাটিই দুই শতাধিক। ২২ ও ২৩ এপ্রিল বিশেষ বিমানে করে তাঁদের দেশে আনার কথা। রাঙামাটি শহরে তুলনামূলক জনবসতি বেশি। তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে ফেরত আসা ব্যক্তিদের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) উত্তম কুমার দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ফেরত আসা ব্যক্তিদের প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন কক্ষ ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে বিকল্প হিসেবে চট্টগ্রামে রাখার জন্যও চিন্তাভাবনা চলছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে পাশে অবস্থান বোধিপুর, মরংছড়ি ও খামারপাড়ার। এই তিন গ্রামে ৩৫৪টি পরিবারের বসবাস। চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে তারা নিজেরা নিজেদের লকডাউন করে রেখেছে। এসব গ্রাম থেকে কেউ বাইরে যায় না। বাইরে থেকে আসা কাউকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয় না। ফলে নিজেদের অনেকটা নিরাপদ ভাবছিলেন এখানকার বাসিন্দারা। কিন্তু দু-এক দিন আগে তাঁরা জানতে পারেন, গ্রাম ঘেঁষে অবস্থিত কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র বানানো হচ্ছে। সেখানে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের রাখা হবে। তাঁরা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকা দেশ থেকে আসায় স্থানীয় লোকজনের উদ্বেগ বাড়ছে।

সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফুল মনি চাকমা ও স্থানীয় গ্রামপ্রধান সুপাঞ্জিতা চাকমা বলেন, তাঁদের এলাকার কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রবাসীদের এনে রাখার কথা শুনে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে ভয়ে গ্রাম ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেক পরিবার বনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।