১১ বছর ২৩ দিন পর ঢাকায় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজ

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। বিশ্বের নামকরা বিমান সংস্থাটি একসময় বাংলাদেশ নিয়মিত পরিচালনা করত। বাংলাদেশ তাদের ফ্লাইটগুলোতে যাত্রীসংখ্যা ছিল প্রচুর। উন্নত সেবা, নিয়মমতো শিডিউল রক্ষা করার কারণে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের দিকে ঝোঁক ছিল আকাশপথের যাত্রীদের। কিন্তু অজানা কারণে ঢাকা থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। দিনটি ছিল ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ। সেদিন যাত্রী পূর্ণ করেই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের শেষ ফ্লাইটটি ঢাকা ছেড়ে যায়।

এরপর এই বিমান সংস্থার কোনো ফ্লাইট বাংলাদেশে আসেনি। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ তাদের বহু কর্মী চাকরি হারিয়েছিলেন। অবশেষে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছে। তবে এটি কোনো নিয়মিত ফ্লাইট ছিল না তাদের। বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের নিয়ে যেতে তাদের এই বিশেষ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিকেলে যুক্তরাজ্যের ২৬৪ জন নাগরিককে নিয়ে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হয় বলে জানায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশে আটকে পড়া যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের ফেরাতে ফ্লাইটটি ঢাকায় এসেছিল। আগামী ২৩, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল তাদের আরও তিনটি ফ্লাইট ঢাকায় আসবে।

এদিকে প্রায় এক যুগ পর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজ ঢাকায় আসায় বাংলাদেশে তাদের অনেক সাবেক কর্মী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের এক কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের নিয়মিত ফ্লাইট ছিল ঢাকায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে মুক্তি পেয়ে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিশেষ ফ্লাইটে করে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের নিয়মিত ফ্লাইট থাকত ঢাকায়। প্রবাসী প্রচুর বাংলাদেশী যুক্তরাজ্যে বসবাস করার কারণে এবং বৃটেনের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে দিন দিন ঢাকা থেকে লন্ডন রুটে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে সংখ্যা বাড়তে থাকে।

ওই কর্মী বলেন, সপ্তাহের প্রতিদিনই তাদের একটি করে ফ্লাইট থাকত। প্রতিটি ফ্লাইটে যাত্রীসংখ্যায় কমতি ছিল না। সুপরিসর এয়ারক্রাফট দিয়ে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইটগুলো আসা যাওয়া করত। তবে ঢাকা থেকে সরাসরি লন্ডনের তাদের ফ্লাইট ছিল না। দিল্লিতে যাত্রা বিরতি করতে হতো। বোয়িং ৭৪৭ এয়ারক্রাফট আসত ঢাকায়। কিন্তু জটিল এক হিসেবের জালে জড়িয়ে পড়ায় যাত্রী চাহিদা থাকার পরও বাংলাদেশ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ।