মির্জাপুরে প্রথম শনাক্ত করোনা রোগী সেরে উঠে বাড়ির পথে

 টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরােসে সংক্রমিত রোগী অখিল সরকার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ছাড়া পেয়েছেন। সেখান থেকে তিনি মির্জাপুরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। বেলা ১১ টার দিকে তাঁর বাড়ি পৌঁছানোর কথা।

 মুঠোফোনে অখিল সরকার জানান, তাঁর করোনা সংক্রান্ত সব পরীক্ষা করা শেষ হওয়ার পর চিকিৎসকেরা করোনা নেগেটিভ বলে তাঁকে জানিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সুস্থ হওয়া আরও কয়েকজন রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

 উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের বৈরাগী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা অখিল সরকার নারায়ণগঞ্জের পলি ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে (মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট) কাজ করেন। গত ৫ এপ্রিল রোববার তিনি গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। করোনা উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে। করোনা শনাক্ত হওয়ার পর গত ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মালেকের নেতৃত্বে চিকিৎসকসহ একটি প্রতিনিধি দল তাঁকে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠায়। একই সঙ্গে তাঁর বাড়ির আশেপাশের ৩০-৩৫টি বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়।

 ওই সময় মুঠোফোনে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ হওয়ায় গত ১৮ মার্চ তিনি স্ত্রী-সন্তানদের বাড়ি পাঠান। এরপর ৫ এপ্রিল তিনি সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে প্রথমে গাজীপুরের চন্দ্রা আসেন। সেখানে থেকে রিকশা ও ভ্যানযোগে মির্জাপুরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হয়ে বাড়ি যান। বাড়ি যাওয়ার সময় তাঁর শরীরের করোনা উপসর্গ ছিল না। হঠাৎ শরীর খারাপ লাগলে স্বাস্থ্য বিভাগে খবর দেন। পরে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

 সুস্থ হওয়ার অনুভূতির বিষয়ে জানতে চাইলে অখিল সরকার বলেন, 'হাসপাতালে ভর্তির একদিন পর থেকে প্রচুর কাশি হচ্ছিল। শ্বাস নেওয়া কষ্টকর ছিল। চিকিৎসা চলতে থাকায় চারদিন পর আমাকে নেবুলাইজ করা হয়। এরপরও কষ্ট করে শ্বাস নিচ্ছিলাম। আস্তে আস্তে ভাল হয়ে উঠি। আমি যে পরিবারের লোকজনের কাছে ফিরতে পারব, কখনো ভাবিনি। তবে মনে সাহস ছিল। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতে সকালে ছাড়পত্র পাওয়া মাত্রই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছি।'

 উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম বলেন, 'উনি টাঙ্গাইল জেলায় প্রথম আক্রান্ত রোগী। তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। আমার খুবই ভালো লাগছে। বাড়ি ফেরার পর তাঁকে সাত দিনে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।'

 মির্জাপুরের ইউএনও মো. আবদুল মালেক বলেন, 'করোনাকে ভয় না করে মনে সাহস রাখতে হবে। এ রোগ হলেও সুস্থ হয়ে যে বাড়ি ফেরা যায়, মির্জাপুরে তার বাস্তব প্রমান অখিল সরকার। তিনি শ্রীঘ্রই বাড়ি ফিরছেন। তবে রোগটি কারও যেন না হয়, সে জন্য সকল নিয়ম মেনে সতর্ক থাকতে হবে।'