শরীয়তপুরের করোনা আক্রান্ত পরিবারে পৌঁছাল সহায়তা

শরীয়তপুর সদর উপজেলায় করোনাভাইরাসে একই পরিবারের তিনজন আক্রান্ত হওয়ার পর অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা পরিবারটির কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার 'করোনায় আক্রান্ত অবরুদ্ধ পরিবারটির জন্য নেই খাদ্যসহায়তা' শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এরপর ওই দিনই ওই পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, সদর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ, ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ। পরের দিন মঙ্গলবার স্বাস্থ্য বিভাগের তিনজন চিকিৎসক ওই গ্রামে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। উপহার হিসেবে দেওয়া হয় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও প্রয়োজনীয় ওষুধ।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) আবদুর রশিদ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন সুস্থ আছেন। এখনো তাদের শরীরে কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। দুই-এক দিনের মধ্যে তাদের আরেক দফা নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

১৯ এপ্রিল ওই গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই বাড়ির কর্তা স্থানীয় বাজারে স্বর্ণশিল্পীর কাজ করেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ি নারায়ণগঞ্জে। সম্প্রতি স্ত্রী–সন্তানকে নিয়ে সেখানে বেড়াতে যান তিনি। নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেখে শ্বশুর, শাশুড়ি, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ৯ এপ্রিল তিনি শরীয়তপুরে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ওই পরিবারের চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠায়। ১৩ এপ্রিল জানা যায়, তাঁদের তিনজন (ওই ব্যক্তির স্ত্রী, শ্বশুর ও শাশুড়ি) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। আর তাদের পাঁচ মাস বয়সী সন্তানের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। পরে প্রশাসন ওই ব্যক্তির বাড়ি ও তাঁর ভাইয়ের বাড়ি অবরুদ্ধ করে দেয়। ওই পরিবারের বসবাসের জন্য একটি ঘর আছে। ওই ঘরেই আক্রান্ত তিন ব্যক্তি এবং শিশুসহ সুস্থ দুজন থাকছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক নারী রান্নাবান্না করেন, সবাই সেই খাবার খান। কেউ তাদের খোঁজখবর নিচ্ছিল না এবং তাঁরা কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছেন না বলে তখন ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পরিবারটির পাশে জেলা প্রশাসন আছে। তাদের খাদ্য, চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেহেতু তাদের কোনো ধরনের উপসর্গ নেই, তাই আপাতত তাদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হবে।