কুষ্টিয়ায় প্রতিদিন ১০০ পুলিশকে নাশতা করান মৌসুমী

কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিকেলের নাশতা করাচ্ছেন মৌসুমী আক্তার নামের এক নারী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দাম বাজার মোড়ে। ছবি: তৌহিদী হাসান
কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিকেলের নাশতা করাচ্ছেন মৌসুমী আক্তার নামের এক নারী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দাম বাজার মোড়ে। ছবি: তৌহিদী হাসান

গতকাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটা। কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকা। শহরে ফাঁকা সড়কে একটি ইজিবাইক চলছে। সামনে লেখা 'বাংলাদেশ পুলিশের সেবায় স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ।' ইজিবাইকটি সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সামনে গিয়ে থামল। ভেতর থেকে একজন নারী হাতে কিছু প্যাকেট নিয়ে নামলেন। পুলিশ সদস্যদের কাছে গিয়ে সেগুলো তুলে দিলেন। এই

প্যাকেট খুলে এক বোতল বিশুদ্ধ পানি, একটি কলা ও এক প্যাকেট বিস্কুট পেলেন পুলিশ সদস্যরা।

এরপর সেখান থেকে ইজিবাইক চলে গেল অন্য কোনো স্থানে। করোনাকালে এভাবেই বিকেলে কুষ্টিয়া শহরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিকেলের নাশতা বিতরণ করছেন মৌসুমী আক্তার। শুধু পুলিশ–ই নয়, সড়কে কোনো গণমাধ্যম কর্মী পেলে তাঁকেও নাশতা দিচ্ছেন। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী।

মৌসুমী আক্তার জানালেন, কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও মানুষকে ঘরে রাখতে বিভিন্ন জায়গায় গলি থেকে বড় সড়কে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। লকডাউনে দোকান–পাট বন্ধ থাকার ফলে কার্যত ক্লান্ত পুলিশ সদস্যরা পাচ্ছেন না পর্যাপ্ত পানি বা খাবার। বিষয়টি অনুভব করে নিজ উদ্যোগে কুষ্টিয়ার মেয়ে হিসেবে পুলিশ সদস্যদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। নিজে ইজিবাইকে প্রতিদিন ১০০ প্যাকেট নাশতা নিয়ে সড়কে সড়কে ঘুরে বিতরণ করছেন।

মৌসুমী আক্তার বললেন, 'কোনো শো-অফের জন্য নয়; শুধু কৃতজ্ঞতা বোধ আর মমত্ববোধ থেকে এটা করছি। স্বচ্ছল জনসাধারণের কাছে অনুরোধ করব, আমাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যেসব পুলিশ, সাংবাদিক নিজের জীবন ও পরিবারের ঊর্ধ্বে দেশের স্বার্থে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন; তাদের জন্য আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসুন।'

২০ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন ১০০ প্যাকেট নাশতা নিয়ে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মৌসুমী। পবিত্র রমজানেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। তাঁর এই কার্যক্রম দেখে পুলিশ সদস্যরাও মুগ্ধ।