করোনা: ভারত থেকে এল সহায়তার দ্বিতীয় চালান

জরুরি চিকিৎসা সহায়তা সামগ্রী হস্তান্তরের আগে ঢাকায় ভারতীয়  হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ।
জরুরি চিকিৎসা সহায়তা সামগ্রী হস্তান্তরের আগে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি চিকিৎসাসামগ্রীর দ্বিতীয় চালান আজ রোববার বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারত। ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস এসব সামগ্রী হস্তান্তর করেন।

দ্বিতীয় চালানের ভারতীয় জরুরি চিকিৎসাসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে এক লাখ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট ও ৫০ হাজার জীবাণুমুক্ত সার্জিক্যাল ল্যাটেক্স গ্লাভস।

এ উপলক্ষে রোববার ভারতীয় হাইকমিশনের ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় রীভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, 'আঁধার ঘুচুক, পরশ থাকুক হৃদয় ভরা। ভারত-বাংলাদেশের গভীর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করার জন্য রবীন্দ্রনাথের শরণাপন্ন হলাম। পুরো পৃথিবীতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ভারত-বাংলাদেশেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৫ মার্চ একটি উদ্যোগ নিয়ে সার্ক নেতাদের একটি ভিডিও কনফারেন্স হয়েছিল। সেই কনফারেন্সে কোভিড-১৯ জরুরি সহায়তা তহবিল ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই তহবিলের আওতায় আজ বাংলাদেশ সরকারকে এক লাখ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট এবং ৫০ হাজার জীবাণুমুক্ত সার্জিক্যাল ল্যাটেক্স গ্লাভস উপহার দিয়েছি। এর আগে আমরা হেড-কভার ও সার্জিক্যাল মাস্ক দিয়েছিলাম।'


ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, “'প্রতিবেশী প্রথম' নীতির আওতায় আমরা সব সময় বলি প্রতিবেশীদের মধ্যে প্রথমেই বাংলাদেশ। আমরা সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে ছিলাম। আগামীতেও থাকব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের যৌথ উদ্যোগে এই সংকটে নিশ্চয় আমরা জয়লাভ করব।'


ভারতীয় হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরবরাহ, প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত থেকে অব্যাহত সহায়তার প্রশংসা করেন। জাহিদ মালেক বলেন, 'সংকটের সময়ে প্রতিবেশী বন্ধুর সহায়তাকে আমরা স্বাগত জানাই।'


ভারতের প্রতিবেশী প্রথম নীতির অংশ হিসেবে এবং কোভিড-১৯–এর বিস্তার রোধে একটি সহযোগিতামূলক আঞ্চলিক প্রচেষ্টার লক্ষ্যে গত ১৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সার্ক নেতাদের নিয়ে ভিডিও সম্মেলন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষণায় ভারতের ১০ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক সহায়তা নিয়ে সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠিত হয়। এর আওতায় আজ বাংলাদেশকে দ্বিতীয় চালানের সহায়তা দেওয়া হলো। চিকিৎসাসামগ্রীগুলো বাংলাদেশ সরকারের কেন্দ্রীয় মেডিকেল স্টোর ডিপোতে পাঠানো হয়েছে। তহবিলের আওতায় প্রথম চালানে ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক এবং ১৫ হাজার হেড-কভার ২৫ মার্চ হস্তান্তর করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ ছাড়া ভারতের স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা কোভিড-১৯ পরিচালনা কৌশল, দক্ষতা বৃদ্ধি, সেরা অনুশীলনের বিনিময় এবং এ–সম্পর্কিত দিকগুলো নিয়ে সার্ক দেশগুলোর স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য ওয়েবিনার আকারে ই-আইটিইসি প্রশিক্ষণ মডিউল ডিজাইন করেছেন। ১৭ থেকে ২১ এপ্রিল অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস, রায়পুর এ অনলাইন কোর্স পরিচালনা করে। যেখানে বাংলাদেশের ৯০ জন স্বাস্থ্যকর্মী অংশ নেন। ভারত সরকারের আইটিইসি উদ্যোগের আওতায় ২৭ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত ভারতের চণ্ডীগড়ের পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ কর্তৃক দ্বিতীয় অনলাইন কোর্সের আয়োজন করা হচ্ছে।