হরিপুরে ইউপি সচিবকে মারধর, ছেলেসহ আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ মানুষকে বিতরণ করা ত্রাণের ভাগ না দেওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর ছেলেকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ঘটনাটি গতকাল শনিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়ন পরিষদের। দণ্ড পাওয়া দুজনকে আজ রোববার সকালে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে হরিপুর থানা-পুলিশ।

দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক শওকত আলী এবং তাঁর ছেলে রুহুল আমিন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ মানুষকে ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম চলছে। শনিবার বিকেলে ছেলে রুহুল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে হরিপুরের গেদুড়া ইউনিয়ন পরিষদে আসেন শওকত আলী। তিনি ত্রাণ কার্যক্রমে ভাগ চেয়ে ইউপি সচিব বাসেদ আলীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি ও তাঁর ছেলে বাসেদ আলীকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন।

ইউপি সচিব বিষয়টি মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান। ইউএনও দ্রুত ইউপি কার্যালয়ে চলে আসেন। পরে অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে শওকত আলীকে সাত দিনের ও তার ছেলে রুহুল আমিনকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

গেদুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ বলেন, ত্রাণের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ৫০টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে ছেলেসহ শওকত আলী ইউপি ভবনে এসে ওয়ার্ডে বিতরণের জন্য ত্রাণ বরাদ্দের ভাগ চেয়ে সচিবকে চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ইউপি সচিবকে মারধর করা হয়।

শওকত আলীর রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করে হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ দেওয়া ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে বিতরণে তাঁরা অঙ্গীকারবদ্ধ।

হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, করোনার দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সব স্তরের মানুষ যখন রাতদিন কাজ করছে, তখন সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে একজন ইউপি সচিব মারধরের শিকার হবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। অভিযোগ পেয়েই বাবা ও ছেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিরুজ্জামান বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ড পাওয়া বাবা-ছেলেকে রোববার জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।