শিবচরে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার

মাদারীপুরের শিবচরে প্রাইভেট শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী (৮) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে ওই স্কুলছাত্রীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত কিশোরকে (১৭) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিবচর থানায় একটি মামলা করেন। অভিযুক্ত কিশোর সম্পর্কে প্রাইভেট শিক্ষকে ছোট ভাই। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর দুইটার দিকে শিবচর উপজেলার আবুখারকান্দি গ্রামের ওই প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী। বাড়িতে প্রাইভেট শিক্ষক ও তার পরিবারের লোকজন না থাকায় স্কুলছাত্রীকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে শিক্ষকের ছোট ভাই (১৭)। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটিকে বাড়িতে চলে যেতে বলে সে। পরে ওই শিক্ষার্থী বাড়ি গিয়ে তার মাকে ঘটনা খুলে বলে।

একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে তাকে চিকিৎসা দিয়ে সন্ধ্যায় শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতেই মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাত রাত ১১টার দিকে ওই স্কুলছাত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় চিকিৎসকেরা।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ভর্তি করা হয় স্কুলছাত্রীকে। মেয়েটির শয্যার শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছে। তার পাশেই ফুফু, খালুসহ তিনজন বসে রয়েছেন। সবার চোখেই কান্নার ছাপ।

ওই স্কুলছাত্রীর ফুফু প্রথম আলোকে বলেন, 'বাড়ি থেকে খেয়ে ও দুপুর ২টার দিকে পড়তে যায়। পরে ওই শিক্ষকের ছোট ভাই মুখে বালিশ চেপে ধরে ওরে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে না বলতে ভয়ও দেখায়। আমাদের ছোট্ট মেয়েটি কি দোষ করল যে ওর এই বয়সে এত বড় শাস্তি পেতে হলো। আমরা ধর্ষকের কঠোর শাস্তি চাই।'

অভিযোগের বিষয়ে ওই প্রাইভেট শিক্ষকের পরিবারের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে প্রতিবেশীরা জানায়, সোমবার বিকেলেই তারা ঘরে তালা মেরে কোথায় যেন চলে যায়। এর আগেও ওই কিশোর এলাকার মেয়েদের উত্ত্যক্ত করত।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) অখিল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, 'রাত ৯টার দিকে ওই স্কুলছাত্রী আমাকে এখানে আসে। পরে আমরা তাকে ভর্তিও রাখি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া হয়। কিন্তু তার ব্লিডিং (রক্তপাত) না থামায় অবস্থা অবনতি হচ্ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।'

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের ঘটনার পরে বাড়িতে তালা মেরে পালিয়েছে প্রাইভেট শিক্ষকের পরিবার। তবে অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশের একাধিক সদস্য কাজ করছে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তকে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।