করোনায় শিক্ষা ব্যাহত, মানসিক চাপে ৯১ ভাগ শিশু-তরুণ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
>ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ। শিশু ও তরুণদের ওপর করোনা পরিস্থিতির প্রভাব জানতে বাংলাদেশসহ ১৩টি উন্নয়নশীল দেশে এ জরিপ চালানো হয়।
ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৯১ শতাংশ শিশু ও তরুণ মানসিক চাপ ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া, সামাজিক দূরত্বের কারণে মানসিক চাপ এবং পরিবারে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়ায় তারা হতাশায় ভুগছে। তবে এর মধ্যেও শিশু ও তরুণেরা এ ভাইরাস রোধে নিজ নিজ কমিউনিটিতে ভূমিকা রাখতে চায়।


আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের এক জরিপে এসব তথ্য এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার 'চিলড্রেন ভয়েসেস ইন দ্য টাইম অব কোভিড-১৯' শিরোনামে প্রকাশিত এই জরিপ প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, মহামারির সময়ে স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতনের জন্য সরাসরি তিনটি কারণকে উল্লেখ করেছে শিশুরা। সেগুলো হলো শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া, সামাজিক দূরত্বের কারণে মানসিক চাপ এবং পরিবারে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়া। শতকরা ৭১ ভাগ শিশু ও তরুণ বলেছে, স্কুল বন্ধের কারণে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ অনুভব করছে।


১৩টি উন্নয়নশীল দেশে এই জরিপ চালানো হয়। এতে বাংলাদেশ, আলবেনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, ব্রাজিল, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মালি, মঙ্গোলিয়া, নিকারাগুয়া, পেরু, ফিলিপাইন, রোমানিয়া, সিয়েরা লিওন এবং তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া সিরীয় শিশুরা। জরিপে ১০১ শিশু ও তরুণ অংশ নেয়। তাদের ৫৮ জন মেয়ে ও ৪৩ জন ছেলে। বয়স ৮ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।


জরিপে এসেছে, করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা হারিয়ে ফেলায় শিশু ও তরুণেরা অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লকডাউন (অবরুদ্ধ) দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে যেসব শিশু প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত, তারা পড়াশোনা করতে পারছে না, যেটা তাদের অনেক সহপাঠী করছে। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি শিশু স্কুলের দেওয়া খাবার থেকেও এখন বঞ্চিত। অনেকের অভিভাবক চাকরি হারিয়ে সন্তানদের খাবার জোগাড় করতে পারছেন না।


ওয়ার্ল্ড ভিশনের অ্যাডভোকেসি ও এক্সটার্নাল এনগেজমেন্টের পার্টনারশিপ প্রধান ড্যানিয়েলা বুজডুসিয়ে বলেন, 'শিশুরা আমাদের জানায়, এ পরিস্থিতিতে দ্বিধা, ভয় ও হতাশা থেকে তারা বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছে না।'


যেসব দেশে জরিপ পরিচালিত হয়েছে, সেখানে দারিদ্র্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে, যা এখন আরও বেড়ে গেছে। ফলে শিশুদের মনেও উদ্বেগ বাড়ছে। ৯১ ভাগ শিশু বলেছে, এই অনিশ্চয়তা ও বিচ্ছিন্ন অবস্থা দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে তারা উদ্বেগ, রাগ, শঙ্কাসহ নানা মানসিক চাপে রয়েছে।


জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও তাদের কমিউনিটির মানুষদের সাহায্য করার ইচ্ছা বা ক্ষমতা কমাতে পারেনি। তারা করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের লড়াইয়ে অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের কমিউনিটির মানুষকে সচেতন করতে ভূমিকা রাখতে চায়।