মে মাসে গুয়াংজু যেতে চায় বিমান

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ফাইল ছবি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা বিশ্বের সঙ্গে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। একমাত্র চীনের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরি ফ্লাইট এখনো চালু আছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। তাই আগামী মে মাস থেকে চীনের গুয়াংজুতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে পারে দেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থাটি।

করোনার কারণে বিমান বেশ ক্ষতিগ্রস্ত পড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই বিমান তাদের যাত্রী হারাতে শুরু করে। মার্চ মাস থেকে বিমানের ফ্লাইট কমতে থাকে। একপর্যায়ে বিমানের ১৭টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ রুটও এই করার কারণেই বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক চাপে এরই মধ্যে পড়ে গেছে। এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আগামী ৭ মে পর্যন্ত চীন ছাড়া সব আন্তর্জাতিক অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু চীনে লাইট চালু রাখা হয়েছে। এই সুযোগ নিতে চায় বিমান। তাই তারা চীনের গুয়াংজুতে আগামী মে মাসেই যাত্রীবাহী ফ্লাইট চালুর চিন্তাভাবনা করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ বুধবার বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুয়াংজুতে অনেক আগেই ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা ছিল বিমানের। নানা কারণে সেটি পিছিয়ে গেছে। তবে চীনের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। গুয়াংজুতে আমাদের প্রস্তুতি ও নেওয়া হয়েছে। আশা করছি মে মাসে লাইট চালু করা যাবে।’

বিমান সূত্রে জানা গেছে, আপাতত প্রতি সপ্তাহে গুয়াংজুতে একটি করে বিমানের ফ্লাইট থাকবে। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে প্রতি সপ্তাহে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে তিনটি করা হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ দিয়ে এই রুটে লাইভ পরিচালনা করবে তারা। এ ছাড়া কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান গুয়াংজুতে।

গুয়াংজুর রুটে ফ্লাইট শুরু হলে বিমানের আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সংখ্যা দাঁড়াবে ১৮। আর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভারতের চেন্নাইয়ে ফ্লাইট শুরু করবে বিমান। এই রুটে প্রতি সপ্তাহে চারটি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

বিমানের এমডি ও সিইও মোকাব্বির হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। তবে সপ্তাহে কটি ফ্লাইট থাকবে, এটি এখন পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।’

বিমান সূত্রে জানা গেছে, গুয়াংজুতে ফ্লাইট চালু হলেও যাত্রীসংখ্যা বিষয়টি নিয়ে তারা ভাবছে। কারণ, এই রুটে ঢাকা থেকে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনস এখন সপ্তাহে একটি করে মোট দুটি ফ্লাইট চালু রেখেছে। করোনা বিপর্যয়ের আগে এই রুটে প্রতিদিনই তাদের একটি করে ফ্লাইট ছিল। কিন্তু যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়ায় ইউএস-বাংলা ও চায়না সাউদার্ন ফ্লাইটসংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। চীনের আরেকটি বিমান সংস্থা চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসও ঢাকা-কুনমিং রুটে প্রতি সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করত। কিন্তু যাত্রী কম থাকায় তারাও আপতত ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আবারও আকাশপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনসেবা দিতে বিমান সংস্থাগুলোর প্রতিযোগিতা শুরু হবে। চীনের সঙ্গে যেহেতু ব্যবসা-বাণিজ্য এ দেশে প্রচুর হয়ে থাকে, তাই বিমান আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চায়। এসব বিষয় বিবেচনা করে তারা গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট চালুর দিনক্ষণ ঠিক করবে।