আওয়ামী লীগ নেতাকে লাইনে দাঁড়াতে বলায় ডিলারকে মারধর

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে টিসিবির পণ্য নিতে আসা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে লাইনে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন ডিলার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার লোকজন ডিলারসহ তিনজনকে মারধর করেন। 

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কাশিয়ানী উপজেলা সদরের রেলস্টেশনে টিসিবির পণ্য বিক্রির সময় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার তিনজন হলেন টিসিবির ডিলার মোল্লা আবু জাহিদ (৫০), তাঁর বাবা আবু তালেব মোল্লা (৭২) ও বড় ভাই সাঈদ মোল্লা (৫২)। তিনজনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আবু জাহিদের সহকারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে কাশিয়ানী রেলস্টেশনে টিসিবির তেল, ছোলা, খেজুর, চিনি, ডাল বিক্রি করা হচ্ছিল। সেখানে নারী ও পুরুষ পৃথক লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছিলেন। আমি লাইনের শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজ করছিলাম। এর মধ্যে কয়েকজন লোক এসে লাইন ভেঙে টিসিবির পণ্য নিয়ে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নারী–পুরুষ ডিলারের ওপর চড়াও হন। পরে ডিলার তাঁদের বুঝিয়ে বলে আবার পণ্য বিক্রি শুরু করেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কালু মৃধা লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি টিসিবির পণ্য নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন। এতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন প্রতিবাদ করেন। ডিলার তাঁকে লাইনে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর জানতে নেতা কালু মৃধার ১৫-২০ জন লোক হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা নিয়ে ডিলারের ওপর হামলা চালান। এতে ডিলার, তাঁর বাবা ও বড় ভাই আহত হন।’

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কালু মৃধা বলেন, ‘আমি সেখানে তেল কিনতে যাই। টাকা জমা দেওয়ার পর ডিলারের বাবা আমাকে তুই এখানে এসেছিস কেন বলে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ডিলার আওয়ামী লীগ সম্পর্কে অকথ্য ভাষায় কটূক্তি করে। তাঁরা তিন বাপ-বেটা আমাকে বেদম কিলঘুষি ও মারপিট করেন। পরে আমি সেখান থেকে চলে যাই। এ খবর পেয়ে আমাদের লোকজন এসে তাঁদের কিলঘুষি মেরেছেন বলে শুনেছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তাদের নিজেদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানাতে পারি। তারপরও ডিলারকে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি।’

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, টিসিবির পণ্য বিক্রিকে কেন্দ্র করে এখানে হাতাহাতির পর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত ব্যক্তিরা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।