সাতক্ষীরায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী আটক

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরার সদর উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে মেহেনাজ পারভিন (১৯) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওই গৃহবধূর স্বামীর দাবি, তাঁর স্ত্রীর শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। সদর উপজেলার ভোমরা সীমান্তের দাসপাড়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মেহেনাজ পারভিন (১৯) সদর উপজেলার ভোমরা গ্রামের দাসপাড়ার রিপন হোসেনের স্ত্রী ও দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের মুকুল হোসেনের মেয়ে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা রিপনকে আটক করেছে।

মেহেনাজ পারভিনের ভাই সুমন হোসেন জানান, তিন মাস আগে তাঁর বোন মেহেনাজের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা গ্রামের দাসপাড়ার শ্রমিক রিপনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা ও সোনার গয়নাসহ এক লাখ টাকার যৌতুক দেওয়া হয়। রিপন ও তাঁর বাবা মায়ের সঙ্গে আগে ভোমরা সীমান্তের লক্ষ্মীদাঁড়ি গ্রামে থাকতো। সম্প্রতি তারা ভোমরা দাসপাড়ায় ঘরসহ জমি কিনে বসবাস করেন। একই সঙ্গে থাকতেন রিপনের বোন রুপা ও তাঁর স্বামী হযরত আলী। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মেহেনাজকে প্রায় নির্যাতন করতেন রিপনসহ তাঁর পরিবারের লোকজন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে মাকে (সুমনের মা) রিপন মুঠোফোনে হুমকি দেন তাঁর মেয়েকে নিয়ে না গেলে তাঁকে মেরে ফেলা হবে। রাত নয়টার দিকে বোনকে নির্যাতনের একপর্যায়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ হত্যা করা হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোনের লাশ লক্ষ্মীদাঁড়িতে এনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার দিয়ে লাশ কবর দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এসে রিপন ও তার পরিবারের সদস্যদের একটি ঘরে আটকে রাখে। রিপনের চাচা বাবলুর সহযোগিতায় ঘরের জানালা ভেঙে রিপনের পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। মৃতের নাক, কান ও মুখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল।

আজ শুক্রবার সকালে রিপনের প্রতিবেশী বিকাশ দাস, গোপাল দাস ও প্রতিমা রানী দাস জানান, রিপন ভোমরা বন্দরে খুচরো পেঁয়াজ বিক্রি করেন। করোনার কারণে কাজ ছিল না তাঁর। অভাবের কারণে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকতো। এ কারণে মেহেনাজকে মারধর করতেন রিপন। গতকল মেহেনাজ মারা গেছে বলে শুনছেন।

এ ব্যাপারে আটককৃত রিপন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তাঁর স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে তিনি মারা যান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ওই গৃহবধূরে লাশ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।