২৪ ঘণ্টায় ১০৯ পুলিশ সদস্যের করোনা শনাক্ত

দেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গত ২৪ঘণ্টায় আরও ১০৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে পুলিশে মোট আক্রান্ত সদস্যের সংখ্যা দাড়াল ৬৪৫। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আক্রান্ত সদস্যের সংখ্যা ছিল ৫৩৬। এ সময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে চার পুলিশের মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত যে চারজন মারা গেছেন, তাঁরা সবাই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্য।

 পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানায়, আজ দুপুরে পর্যন্ত সারা দেশে পুলিশের ১ হাজার ২২৪ জন সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আর আইসোলেশনে আছেন ১৫৯ জন। আর করোনায় আক্রান্ত ৫৫ জন পুলিশ সদস্যকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে।

 করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে আজ সকালে ঢাকায় নাজির উদ্দীন নামের এক এসআই মারা যান। তিনি রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নাজির উদ্দীন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রতিরক্ষা শাখায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় গত ২৫ এপ্রিল। নাজির উদ্দীনের গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার ভাংগুরা থানার কাজিটোলা গ্রামে। সকালে রাজারবাগে জানাজা শেষে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।

আগে পুলিশের যে তিন সদস্য মারা গেছেন, তাঁরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল খালেক, ট্রাফিক কনস্টেবল আশেক মাহমুদ ও কনস্টেবল জসিম উদ্দিন।

পুলিশ সদর দপ্তরের অপারেশন শাখা থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত ইউনিটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ঢাকা মহানগরীতে। সেখানে প্রতিদিনই কেউ না কেউ সংক্রমিত হচ্ছেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা তাঁদের ভাবিয়ে তুলছে। মহানগর পুলিশের আটটি অপরাধ বিভাগ ছাড়াও পরিবহন, প্রোটেকশন, উন্নয়ন, গোয়েন্দা, স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপসহ ২২টি বিভাগের সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের তালিকায় ১২ জন নারীও আছেন।

মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের আবাসন ব্যবস্থার কারণে তাঁদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ হচ্ছে। সেখানে গাদাগাদি করে পুলিশ সদস্যদের থাকতে হচ্ছে। এতে একজন আক্রান্ত হলে তা সহজেই অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

এছাড়া পুলিশের যেসব সদস্য রাস্তায় টহল ও তল্লাশি করছেন, তাঁদের ভেতরে করোনা সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাঁরা যেমন সামাজিক দূরত্ব মানছেন না, তেমনি নিজেদের সুরক্ষা পোশাক নিয়ে ঢিলেঢালা ভাব। আবার এক গাড়িতে পাশাপাশি বসে ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছেন। এতে একজন কোনোভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সহজেই তা অন্যকে সংক্রমিত করার আশঙ্কা থাকছে। রাজারবাগের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।