পূর্ণ বেতন প্রাপ্তি ও বাড়িভাড়া মওকুফের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

আজ বিকেলে দুই দফা দাবিতে শ্রীপুরের ডেনিমেক কারখানার হাজারো শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। ছবি: সাদিক মৃধা
আজ বিকেলে দুই দফা দাবিতে শ্রীপুরের ডেনিমেক কারখানার হাজারো শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। ছবি: সাদিক মৃধা

পূর্ণ বেতন পাওয়ার পাশাপাশি বাড়িভাড়া মওকুফের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার ডেনিমেক কারখানার হাজারো শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। পরে মেয়রের আশ্বাসে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দেন। আজ শনিবার বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত অবরোধ চলে।


ডেনিমেক কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে কারখানা বন্ধ থাকাকালে তাঁদের বেতনের ৬০ শতাংশ পরিশোধ করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এটি জাতীয় সিদ্ধান্ত হলেও শ্রমিকেরা তা মানতে নারাজ। তা ছাড়া তাঁদের বাড়িভাড়া পুরোপুরি মওকুফের ব্যবস্থা করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি তাঁদের।


বিকেল সাড়ে চারটায় মাস্টারবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কারখানাটির হাজার হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে মিছিল করছেন। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে জরুরি পণ্যবাহী গাড়িগুলোর যানজট তৈরি হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পুলিশ এসে অবস্থান নেয়। বিকেল পাঁচটায় শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিসুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাড়িভাড়ার দাবির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য তিনি শ্রমিকদের কাছ থেকে তিন দিন সময় চেয়ে নেন। এ ছাড়া বেতনের বিষয়টিও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এমন আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন।


ওয়ালিউর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের বেতন পুরোপুরি দিতে হবে। না হলে আমরা চলতে পারব না। তা ছাড়া বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সেগুলো মওকুফের ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।’


মিলি আক্তার নামের এক শ্রমিক বলেন, কোনো কাজ নেই। ঘরে বসে খেতে খেতে তাঁদের অনেক টাকা ঋণ হয়েছে। বেতন কম পেলে সংসার চলবে না।


জুবায়ের হোসেন নামের অপর শ্রমিক জানান, তাঁদের এখন না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। বেতন পুরোপুরি পরিশোধ করলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালো থাকা যাবে।


এসব বিষয়ে ডেনিমেক কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল কাদির প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের দাবির বিষয়টি বেতনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং বাড়িভাড়া মওকুফের বিষয়ে। তা ছাড়া বেতন মূলত আমরা দিচ্ছি না। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের দেওয়া তালিকা ধরে ধরে বেতন পরিশোধ করছে। সেটা জাতীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিশোধ করা হচ্ছে।’


শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের দাবির বিষয়গুলো আসলে খুব বেশি স্পষ্ট নয় এবং আন্দোলনটি সুসংগঠিতও নয়। একেকজন একেক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছিলেন। মেয়র সাহেব এসেছিলেন। তাঁদের দাবিদাওয়া বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ায় শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।’