আক্রান্তের খবর জানাতে ফোন, পেলেন মৃত্যুর খবর

নরসিংদী শহরের এক ব্যক্তির তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। করোনাভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসকেরা তাঁর নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। ওই দিনই ঢাকায় যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

৮ মে শুক্রবার ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করার পরদিন শনিবার রাত ১১টায় পাওয়া ফলাফলে তাঁকে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এই খবর পরিবারের সদস্যদের জানাতে সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে ফোন করা হলে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানতে পারে তারা। মারা যাওয়া ব্যক্তি একজন মাছ বিক্রেতা ছিলেন।

স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই ব্যক্তি হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন এবং তাঁর হৃৎপিণ্ডে তিনটি ব্লক ছিল। গত শুক্রবার তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকেরা করোনার সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে তাঁর পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে ঢাকায় যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরদিন জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এই খবরে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, তাঁর লাশের সৎকারে স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তি অংশ নিয়েছিলেন। এ ছাড়া মৃত্যুর আগের দিনও তিনি বাজারে মাছ বিক্রি করেছিলেন এবং তখন বেশ কিছু লোকের সংস্পর্শে এসেছিলেন।

নরসিংদী সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুইক রেসপন্স টিমের আহ্বায়ক মো. শাহ আলম মিয়া জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফল ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ওই পরিবারের সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ পর্যন্ত জেলার ছয় উপজেলা মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৫৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেলায় ১২৫ জন, রায়পুরায় ২৭, পলাশে ১৭, শিবপুরে ১৮, বেলাবতে ২৫ ও মনোহরদীতে ৫ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে আক্রান্ত তিন ব্যক্তির। তবে এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৪০ জন। এ ছাড়া আইসোলেশনে আছেন ৭৪ জন।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সদর উপজেলার একজন ও ২৩ এপ্রিল কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে পলাশ উপজেলার একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে পুরো জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩।