৯২১ শিক্ষার্থীকে ১১ লাখ টাকা অর্থসহায়তা দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে থমকে আছে দেশ। এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের মতো আর্থিক সংকটে পড়েছেন টিউশন-হারানো অসহায় ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা৷ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের এমন ৯২১ শিক্ষার্থীকে ১১ লাখ ২ হাজার টাকার অর্থসহায়তা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হকের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ গঠিত হয়েছিল। পরে ২০১৯ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে এই সংগঠনের প্যানেল থেকে দুজন (ভিপি নুরুল ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন) জয়ী হন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ করা হয়েছে।

পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থীদের তাঁরা যে অর্থসহায়তাটি করেছেন, তার মূল নিয়ামক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজকেন্দ্রিক সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থ। এ ছাড়া প্রকাশ্যে তহবিল সংগ্রহের জন্য তাঁরা বিকাশ, রকেট, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিলেন। এভাবেই তাঁরা অর্থ সংগ্রহ করেছেন। নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে মামুন বললেন, ‘প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের অর্থসহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন দাতাও জোগাড় হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করব, যাতে যেকোনো সমস্যায় এই তহবিল কাজে লাগানো যায়। আমরা শিক্ষার্থী ও দাতা উভয়ের ডেটাবেইস তৈরি করেছি। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য আমরা তহবিল ও সহায়তার পরিমাণ ফেসবুকে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিই। ভবিষ্যতেও আমরা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের পাশে থাকব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসান আল মামুন জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৩টি সরকারি কলেজ ও একটি জেলার ৯২১ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে অর্থসহায়তা করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০৭ শিক্ষার্থীকে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৬০ টাকা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৪ জনকে ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা ও ৬৮ জনকে খাদ্যসামগ্রী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জনকে ৮০ হাজার টাকা, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জনকে ৩০ হাজার টাকা, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জনকে ২০ হাজার টাকা, ঢাকা কলেজের ১০২ জনকে ১ লাখ ৮ হাজার ৯৭৫ টাকা, ইডেন মহিলা কলেজের ১৮ জনকে ১৩ হাজার ৭০০ টাকা, তিতুমীর কলেজের ৩০ জনকে ২৪ হাজার টাকা এবং নেত্রকোনা জেলার ৫০ জন অসহায় ও দরিদ্র শিক্ষার্থীকে ৩৫ হাজার টাকা অর্থসহায়তা করা হয়েছে। মোট সহায়তার পরিমাণ ১১ লাখ ২ হাজার ৩৫ টাকা।

তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে অর্থসহায়তা করা হয়েছে, তার তহবিল সংগ্রহ ছাত্র অধিকার পরিষদ একা করেনি৷ পরিষদের পাশাপাশি এই উদ্যোগে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, প্রেসক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, 'আমরা জকসু চাই' নামের একটি মঞ্চ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এই তহবিল গঠন করা হয়৷