করোনা রোগীর বাড়িতে ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দেন তিনি

ময়মনসিংহের ভালুকায় এক করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী ও ফল। ছবি: প্রথম আলো
ময়মনসিংহের ভালুকায় এক করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী ও ফল। ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কাছে অনেকেই যেতে ভয় পান। এমনকি স্বজনেরাও তাঁদের কাছে সহজে যেতে চান না। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে পড়ার আশঙ্কায় মানুষ যেন অমানবিক হয়ে উঠছে। এই রকম এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় এক সরকারি কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। শুনছেন তাঁদের কষ্টের কথা। সমবেদনা জানাচ্ছেন। হাতে তুলে দিচ্ছেন ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী।

ওই সরকারি কর্মকর্তা হলেন ভালুকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোমেন শর্মা। গতকাল শনিবার বিকেলে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চার রোগীর বাড়িতে যান। তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।

ভালুকা উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত শনিবার উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের একটি কারখানায় এক শ্রমিক দম্পতি করোনায় আক্রান্ত হন। তাঁদের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায়। তাঁরা ভালুকায় বাসা ভাড়া থেকে ওই কারখানায় কাজ করেন। এ ঘটনায় পরদিন ওই দম্পতির বাড়িতে ১০ দিনের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়ে বাড়িটি লকডাউন করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। সাত দিন পর ওই পরিবারসহ উপজেলার অন্য করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য রোমেন শর্মাকে নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। একই সঙ্গে তিনি ভালুকা উপজেলায় আক্রান্ত সব রোগীর বাড়িতে ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গতকাল বিকেলে রোগীদের বাড়িতে ওষুধ ও ত্রাণ পৌঁছে দেন রোমেন শর্মা ।

এ বিষয়ে রোমেন শর্মা বলেন, উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা হয়েছে। তাঁরা ভালো আছেন। শনাক্তের আট দিন পরও কারও শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। ইউএনওর উদ্যোগ ও নির্দেশে প্রত্যেক করোনা রোগীর বাড়িতে এক ডজন করে লেবু ও কলা, দুটি আনারস, এক কেজি পেয়ারা, মাল্টা, লবণ, পেঁয়াজ, এক লিটার সয়াবিন তেল, ১০ কেজি চাল ও দুটি সাবান পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সহায়তা করার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও মাসুদ কামাল বলেন, উপজেলায় মোট ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন ও একজন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা নিজ নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এসব রোগীর বাড়িতে ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।