১৩ সপ্তাহের বকেয়া বেতন পেলেন ৫৩৭ শ্রমিক

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কালিটি চা-বাগানের ৫৩৭ জন শ্রমিক রোববার ১৩ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পেয়েছেন। বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিতে বাগানের শ্রমিকেরা বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন। পরে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। 

উপজেলা প্রশাসন ও বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিটি বাগানের ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সিলেটের ‘জোবেদা টি কোম্পানি’। বাগানের ৫৩৭ জন শ্রমিক কাজ করেও ১৩ সপ্তাহ ধরে মজুরি পাচ্ছিলেন না। মজুরির দাবিতে তাঁরা বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছিলেন।

১৯ এপ্রিল প্রথম আলো অনলাইনে ভিডিওসহ ‘মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের সাত কিলোমিটার পদযাত্রা’ এবং ১৬ এপ্রিল প্রথম আলোর ছাপা পত্রিকায় ‘চা-শ্রমিকদের ভুখা মিছিল’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল।

এ পরিস্থিতিতে বিষয়টির সমাধানের জন্য ২২ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিনের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে মালিকপক্ষ প্রথমে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে মজুরি পরিশোধের কথা দেয়। কিন্তু তা পরিশোধ করা হয়নি। পরে আরও কয়েক দফা সময় নেন তাঁরা।

অবশেষে রোববার বেলা তিনটার দিকে বাগানের ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রমিকদের দাঁড় করিয়ে মজুরি প্রদান করা হয়। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তা চলে। গতকাল মোট ১ কোটি ৭ লাখ টাকা মজুরি প্রদান করা হয়।

এ সময় সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওছার দস্তগীর, জোবেদা টি কোম্পানির চেয়ারম্যান আবদুল খালিক, বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দেব, স্থানীয় কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম এ রহমান, কালিটি বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শম্ভু দাস, সম্পাদক উত্তম কালোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রমিকনেতা উত্তম কালোয়ার বিকেল পাঁচটার দিকে মুঠোফোনে বলেন, ‘শ্রমিকদের আন্দোলন সফল হয়েছে। সব শ্রমিক ১৩ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পেয়েছেন। সবাই খুশি। কাল (সোমবার) বকেয়া অন্য ভাতা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সহযোদ্ধাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’

ইউএনও এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, প্রশাসন শ্রমিকদের পাশে ছিল, এখনো আছে। কালিটির শ্রমিকদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ত্রাণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ২০০ শ্রমিককে এককালীন ৫ হাজার টাকা করেও দেওয়া হয়েছে।