গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদের দিন গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার শোভারামপুর গ্রামে ওই গৃহবধূ সোনিয়া আক্তারের শ্বশুরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশীরা বলছেন, প্রতিবেশী খাদিজা আক্তারের সঙ্গে সোনিয়ার স্বামী শরিফুলের পরকীয়া ছিল। তা জেনে ফেলায় শরিফুল, খাদিজাসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সোনিয়াকে বেদম পিটুনি দিলে তিনি মারা যান। 

পুলিশ, নিহত গৃহবধূর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শোভারামপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে শরিফুলের সঙ্গে ২০১৩ সালে পাশের মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের মো. অহিদ মিয়ার মেয়ের বিয়ে হয়। তাঁদের এক বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি খাদিজা মা-বাবার সঙ্গে একই গ্রামে থাকেন। শরিফুল ঈদের দিন রাত নয়টার দিকে খাদিজাকে নিজ বাসায় নিয়ে আসেন। এ সময় তাঁদের অনৈতিক কাজে বাধা দেন সোনিয়া। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শরিফুল, খাদিজাসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সোনিয়াকে মারধর করেন। এতে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়।
গতকাল বুধবার সোনিয়া আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সোনিয়ার বাবা মো. অহিদ মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
মো. অহিদ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে ফোন করে সোনিয়ার অসুস্থতার কথা জানানো হয়। এর আধা ঘণ্টা পর তিনি মেয়ের শ্বশুরবাড়ি পৌঁছান। সেখানে বিছানায় সোনিয়াকে নিথর পড়ে থাকতে দেখেন। মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে শ্বশুর-শাশুড়ি বলেন, গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু ফাঁস লাগানোর স্থান তাঁরা দেখাতে পারেননি। পরে প্রতিবেশীরা তাঁকে জানান, শরিফুল, খাদিজা ও শ্বশুরবাড়ির অন্যদের পিটুনিতে সোনিয়া মারা গেছেন।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমেদ নিজামী বলেন, সোনিয়ার মাথা ও ডান কানের মাঝে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পেছন থেকে মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের ফলে তাঁর মৃত্যু হতে পারে। এ ঘটনায় সোনিয়ার বাবা একটি হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে সোনিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।