করোনায় কাজ করতে চান নিয়োগবঞ্চিত ১৬০ চিকিৎসক

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনার এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা করতে চান নিয়োগবঞ্চিত ১৬০ জন চিকিৎসক। এসব চিকিৎসকের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) সুপারিশ করেছে, কিন্তু চূড়ান্ত নিয়োগ পাননি তাঁরা।


এই চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনার এই বিশেষ সময় নিয়োগ পেলে তাঁরা দেশের জন্য কাজ করতে চান। এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, এই চিকিৎসকদের নিয়োগের বিষয়ে তাঁরা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন।


এই চিকিৎসকদের তথ্যমতে, তাঁরা পিএসসি কর্তৃক অনুষ্ঠিত ৩২তম থেকে ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষা অংশ নেন। এসব পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে তাঁদের স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়। বিভিন্ন যাচাই-বাছাই শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে। এই গেজেট থেকে ১৬০ জন বাদ পড়েন। এই তালিকায় আছেন ৩২তম বিসিএসের ১১ জন, ৩৩তম বিসিএসের ১১৪ জন, ৩৪তম বিসিএসের ১০ জন, ৩৫তম বিসিএসের ৬ জন, ৩৬তম বিসিএসের ৫ জন ও ৩৭তম বিসিএসের ১৪ জন।


৩২তম বিসিএস অনুষ্ঠিত হয় ২০১২ সালে। ৩৭তম বিসিএসের ফল প্রকাশ হয় ২০১৮ সালে।


নিয়োগ না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, তাঁরা জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ে নিজেদের উদ্যোগে যোগাযোগ করে জেনেছেন যে পুলিশের নেতিবাচক প্রতিবেদনের কারণে তাঁরা বাদ পড়েছেন। এ জন্য তাঁরা দিনের পর দিন জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিয়েও সুফল পাননি। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা হতাশ। বাধ্য হয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বরাবর তাঁরা একটি আবেদনপত্র লেখেন। এতে তাঁরা দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কাজ করতে চান বলে উল্লেখ করেন। এ জন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে যেন তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়। যেকোনো জায়গায় তাঁরা কাজ করতে প্রস্তুত।


চিকিৎসকেরা বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ডাক্তাররা এই পরিস্থিতিতে দেশের জন্য লড়াই করতে সব সময় প্রস্তুত। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমাদের যেখানেই পদায়ন করা হবে, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সচেষ্ট থাকব।’

এক প্রার্থী বলেন, ৩২তম বিসিএসের পর আরও ৮টি বিসিএস চলে গেছে। এই সময়ের মধ্যে বহুবার তিনি মন্ত্রণালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, কিন্তু নিয়োগ পাননি। আরেক প্রার্থী বলেন, ‘বিসিএসে পাস করেছি। পোস্টিং কোথায়, তা যখন কেউ জানতে চায়, তখন লজ্জায় পড়ে যেতে হয়। পরিবারের সবাই হতাশ।’


নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকেরা বলছেন, তাঁদের কারোরই চাকরির বয়স নেই। একেকটি বিসিএসে পিএসসি থেকে নিয়োগ পেতে তিন থেকে চার বছর লেগে যায়। এরপর প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়লে হতাশার শেষ থাকে না। এই পরিস্থিতি থেকে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই তাঁদের রক্ষা করতে পারেন।

এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেতিবাচক প্রতিবেদনের জন্য অনেকে বাদ পড়েন। তবে চিকিৎসকদের বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। ইতিমধ্যে অনেককে নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছি। এরপরও যাঁদের প্রজ্ঞাপন হয়নি, তাঁদের বিষয়টি আন্তরিকভাবে দেখে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।’