অভয়নগরে চরমপন্থী দলের সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

 যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার মোয়াল্লেমতলা গ্রামের বাড়ির সামনে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ব্যক্তির নাম শেখ আতিয়ার রহমান (৫৭)।

 পুলিশ দাবি করেছে, আতিয়ার রহমান চরমপন্থী দলের সদস্য ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের একজনকে হত্যা করার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই খুনের প্রতিশোধ নিতে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন ও পুলিশ জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় আতিয়ার রহমান উপজেলার মোয়াল্লেমতলা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন । বাড়ির কাছে আসার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার রাতে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।

 পুলিশ জানায়, যশোরের অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট এবং খুলনার ফুলতলা উপজেলার উত্তরডিহি, পায়গ্রাম কসবা ও ফুলতলা বাজার এলাকায় ২০১৪ সালের আগে আতিয়ার রহমান এবং তার শ্যালক গিয়াস উদ্দীন চরমপন্থি দলের সদস্য হিসাবে সক্রিয় ছিলেন। গিয়াস উদ্দীন চরমপন্থী দলের একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। একই সময় ওই এলাকায় আর একটি গ্রুপের নেতৃত্ব ছিলেন নিশান নামে অপর এক চরমপন্থী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালে গিয়াস উদ্দীন ও তাঁর দলের সদস্যরা নিশানকে হত্যা করে।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, নিশান হত্যা মামলায় তাঁর পরিবারের কেউ বাদী হয়ে  মামলা না করায় অভয়নগর থানা পুলিশ বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দীন, শেখ আতিয়ার রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর গিয়াস উদ্দীন ও শেখ আতিয়ার রহমান ভারতে পালিয়ে যান। সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে আদালতে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এরপর প্রায় এক বছর আগে শেখ আতিয়ার রহমান ভারত থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর নিজের বাড়িতে থেকে তিনি অভয়নগরের যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে বদলি শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।

 অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিহত চরমপন্থী নিশানের খালাতো ভাই লিমন ও তাঁর দুই সহযোগী আতিয়ার রহমানকে কুপিয়ে জখম করেন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।