নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে কার্যালয় ঘেরাও

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে আবাসিক সরবরাহের কার্যালয় ঘেরাও করা হয় আজ মঙ্গলবার। ছবি: প্রথম আলো
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে আবাসিক সরবরাহের কার্যালয় ঘেরাও করা হয় আজ মঙ্গলবার। ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় কয়েক শ গ্রাহক বিদ্যুতের আবাসিক সরবরাহের কার্যালয় ঘেরাও করেন। এ সময় প্রত্যাশিত সেবা দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রটির নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে কর্মস্থল ত্যাগ করার জন্য ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে (আল্টিমেটাম) দেওয়া হয়।

কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন। কর্মসূচি চলাকালে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

পরে গ্রাহকেরা কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সভা করেন। সভায় বলা হয়, ভৈরব বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিকভাবে গতিশীল জনপদ। এই উপজেলায় এখন ঘন ঘন লোডশেডিং মেনে নেওয়া যায় না। বিশেষ করে রমজান মাস শুরুর পর থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও বেড়েছে। কোনো একটি ফিডারে সারা দিনের জন্য বিদ্যুৎ না থাকলে সেই তথ্য আগে থেকে গ্রাহকদের জানানো হয় না। ট্রান্সফরমার বিকল হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নতুন করে স্থাপনের বিধান রয়েছে, কিন্তু ভৈরবে তা হচ্ছে না। বিকল হলে পুনরায় স্থাপনের জন্য গ্রাহকদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে।

গ্রাহকেরা বলেন, সেবার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। অভিযোগ দেওয়ার জন্যে টিঅ্যান্ডটি ফোনটিতে কল দিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। সমস্যার কথা জানিয়ে বারবার প্রতিকার চাওয়ার পরও নির্বাহী প্রকৌশলী কোনো অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না।

পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিক আহমেদ বলেন, বিশেষ করে সাহ্‌রি, ইফতার ও তারাবি নামাজের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখায় এই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কাল বুধবার দুপুরের মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী কর্মস্থল ত্যাগ না করলে পরদিন আরও বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানায়, উপজেলাটির মোট গ্রাহক ৪১ হাজার। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ৩৩ হাজার, বাণিজ্যিক ৮ হাজার এবং শিল্পকারখানা গ্রাহক ৭৭টি। গ্রীষ্মকালে মোট চাহিদা ২৪ মেগাওয়াট। ১০টি ফিডার ও ৪টি পাওয়ার টান্সফরমারের মাধ্যমে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। চলতি বছরের ১৮ মার্চ একটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে পড়ে। এই কারণে ১০ মেগাওয়াট লোড কম নিতে হয়। কয়েক দিনের মধ্যে নতুন একটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়। তবে সেটাতে ছয় মেগাওয়াটের বেশি লোড নেওয়া যাচ্ছিল না। এতে করে লোডশেডিং দিতে হয়। ৪ এপ্রিল আরও একটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে পড়ে। তখন সমস্যাটি আরও বড় হয়। সমস্যা সমাধানে নতুন একটি ট্রান্সফরমার স্থাপনের কাজ চলছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, আল্টিমেটামের বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী নিজ দপ্তরের সমস্যা সমাধানে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চান না। তিনি সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী শনিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছেন।