বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর

বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধের একপর্যায়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। ছবি: আল-আমিন
বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধের একপর্যায়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। ছবি: আল-আমিন

গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁরা সড়কে থাকা একটি গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন লাগিয়ে দেন।

পুলিশ, শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, করোনাভাইরাসের প্রকোপে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল টঙ্গীর বিসিক এলাকার কিছু কারখানা। সম্প্রতি আবার কারখানা চালু হলে কাজ শুরু করেন শ্রমিকেরা। কিন্তু এর মধ্যে কয়েকটি কারখানায় গত এপ্রিল মাসের বেতন বাকি পড়ে যায়। এ নিয়ে শ্রমিক ও কারখানার মালিকপক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। এর জের ধরে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শ্রমিকেরা নিজ নিজ কারখানার সামনে বকেয়া বেতনের দাবিতে সমবেত হন এবং বিক্ষোভ-মিছিল শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে চলাচল বন্ধ করে দেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ রাখার পর তাঁরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন এবং একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন কারখানার প্রায় কয়েক শ শ্রমিক টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও টঙ্গী–ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

শ্রমিকদের দাবি, তাঁরা গত এপ্রিল মাসের বেতন এখনো পাননি। সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁদের বেতন–বোনাস দিতে কারখানার মালিকেরা গড়িমসি করছেন। এ নিয়ে তাঁরা একাধিকবার মালিকপক্ষের সঙ্গে বসেছেন, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে তাঁরা বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিক এলাকার র‌্যাডিসন কারখানার একজন শ্রমিক বলেন, বকেয়া বেতন না পেয়ে তাঁদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বাড়ি ভাড়া, দোকানের খরচ, ছেলেমেয়েদের স্কুলের বেতনসহ সবই বাকি পড়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন।

এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপসহকারী কমিশনার (এসি দক্ষিণ) থুয়াই অংপ্রু মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিকদের আজকের দাবিটা অযৌক্তিক। আমরা সকাল থেকে বিভিন্ন কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা এপ্রিলের বেতন ইতিমধ্যে ব্যাংকে পাঠিয়েছেন। দু-এক দিনের মধ্যে শ্রমিকেরা সেই বেতন পাবেন। আমরা শ্রমিকদের বারবার সেটা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁরা কিছুতেই বুঝতে চাইছেন না।’