কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলায় প্রবাসীর অশোভন আচরণ, এসির আবদার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় তথ্য গোপন করে নিজ বাড়িতে অবস্থান করায় লাল পতাকা উড়িয়ে এক লন্ডন প্রবাসীর বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। আর ওই প্রবাসীকে (৩৫) বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলা প্রশাসন এ ব্যবস্থা নেয়। 

উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মে ইংল্যান্ড প্রবাসী ওই ব্যক্তি বাংলাদেশে আসেন। ওই দিনই তিনি নাসিরনগর উপজেলা সদরে নিজ বাড়িতে এসেই এলাকায় খোলামেলা মেলামেশা ও চলাফেরা শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন কৃষি কর্মকর্তা ওই বাড়িতে গিয়ে তাঁকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুরোধ জানান। কিন্তু প্রবাসী ব্যক্তি কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। ওই কর্মর্কতা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। ইউএনও গতকাল বুধবার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেমকে ওই প্রবাসীর বাড়িতে পাঠান। হোমকোয়ারেন্টিন মানতে অনুরোধ করায় তখনও প্রবাসী চেয়ারম্যানের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই প্রবাসীকে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি। আজ দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ইউএনও নাজমা আশরাফী ওই প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন মানতে বলেন। তখনো ওই প্রবাসী অশোভন আচরণ করেন। লন্ডন শহরে তাঁর করোনার পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং বাংলাদশে কেন আবার পরীক্ষা করা হবে এসব নিয়ে তর্ক করেন ওই প্রবাসী।

ওই প্রবাসী বাসা থেকে বের হবেন, হোমকোয়ারেন্টিন মানবেন না এবং প্রয়োজনে বৃটিশ হাইকমিশনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। বেলা দুইটার দিকে তাঁকে বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। পরে লাল পতাকা উড়িয়ে প্রবাসীর বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন।

প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসির ব্যবস্থা করে দিতে হবে বলে জানিছেন ওই প্রবাসী।ওই প্রবাসী কারো কথাই শুনতে রাজি ছিলেন না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা আশরাফী জানান, এর আগেও ওই পরিবারের দুজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তথ্য গোপন করে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করে। পরে তাদের হোমকোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। আজকে ওই প্রবাসী ও তাঁর পরিবার যে আচরণ করেছে তা দুঃখজনক। লন্ডনপ্রবাসী ওই ব্যক্তিকে জেলার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।