স্কুলছাত্রী সোনিয়ার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি চাইল পরিবার

নরসিংদীর রায়পুরার স্কুলছাত্রী সোনিয়া আক্তার (১৩) হত্যাকাণ্ডের এজাহারভুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে নরসিংদী শহরের ভেলানগরে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নিহত সোনিয়া রায়পুরার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল চানপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের জালাল মিয়ার মেয়ে এবং স্থানীয় সদাগরকান্দি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গত ২৮ মার্চ শনিবার সকালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া ও তাঁর সমর্থকদের হামলার সময় বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাকে টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত স্কুলছাত্রী সোনিয়া আক্তারের মা জোসনা বেগম। এ সময় বক্তব্য দেন চানপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শুক্কুর আলী, মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী ও নিহতের স্বজন ইলিয়াস হোসেন। সোনিয়ার বাবা জালাল মিয়াসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির মিয়ার মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলমান ছিল। গত ২৭ মার্চ রাতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এতে নাসির মিয়ার পক্ষের লোকজন পালিয়ে গেলে পরদিন সকালেই বাবুল মিয়া দলবল নিয়ে নাসির পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার সময় হামলাকারীরা জালাল মিয়াকে মারধর করতে থাকলে মেয়ে সোনিয়া আক্তার বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। ওই সময় উত্তেজিত বাবুল মিয়া নিজ হাতে সোনিয়াকে টেঁটাবিদ্ধ করে চলে যান। আশপাশের লোকজন বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে ওই দিনই অবস্থার অবনতি হলে সোনিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিনই বিকেল পাঁচটায় সোনিয়া মারা যায়। পরে সোনিয়ার বাবা জালাল মিয়া বাদী হয়ে বাবুল মিয়াকে প্রধান আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন।

জোসনা বেগম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন প্রধান আসামি বাবুল মিয়া। কিন্তু মামলা করার পর থেকেই তিনিসহ অন্য এজাহারভুক্ত আসামিরা আমাদের উল্টো মামলা, হামলা ও হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা নিরাপত্তাহীনতা আর উৎকণ্ঠায় দিন পার করছি। অথচ আমাদের চোখের সামনেই মেয়েকে হত্যা করেছে বাবুল মিয়া। আমি আমার মেয়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব আসামির গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত বিচার চাই।’

জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির জানান, চানপুর ইউনিয়নের ওই স্কুলছাত্রী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহারভুক্ত বেশ কয়েকজন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার পর থেকে পলাতক মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়াকে সম্প্রতি অন্য এক মামলায় নবীনগর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাঁকে আমাদের কাছে হস্তান্তরের আবেদন করা হয়েছে।