বনানী ও খিলগাঁওয়ে বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত

রাজধানীর বনানী ও খিলগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বনানীর কড়াইলে নিহত ব্যক্তি হলেন আবদুল জলিল (৪৫) ও খিলগাঁওয়ে বেলাল হোসেন (২৯)।

র‌্যাব-১ এর এর স্কোয়াড কমান্ডার সহকারী পুুলিশ সুপার (এএসপি) কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, র‌্যাব-১ এর কাছে গোপন খবর আসে বনানীর কড়াইল টিএনটি বটতলা বস্তির মাঠে পাঁচ-ছয়জন মাদক ব্যবসায়ী অবস্থান করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে র‌্যাব-১ এর একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ১০ মিনিট গুলিবিনিময়ের একপর্যায়ে একজন মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে বস্তিবাসীরা মাদক ব্যবসায়ী আবদুল জলিল বলে শনাক্ত করে। গুলি বিনিয়ের সময় একজন র‌্যাব সদস্য পড়ে গিয়ে আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ১১ রাউন্ড গুলি ও ৫০০ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। জলিল কড়াইলে বৌ বাজার বস্তির মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ১৬ টি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা রয়েছে।

কড়াইল বস্তি ইউনিটের যুবলীগ নেতা মো. মোস্তফা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মাদক ব্যবসা করার অভিযোগে কয়েক মাস আগে বনানী থানার পুলিশ জলিলের বৌবাজারের বস্তি ঘরগুলো তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। এরপর তিনি সপরিবারে অন্যত্র চলে যান। ওই বস্তির ঘরগুলো এখন স্কুল করা হয়েছে।

এদিকে খিলগাও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাকাতি ও মাদকসহ বহু মামলার আসামি বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেলালের তথ্যের ভিত্তিতে থানা পুলিশের একটি দল রাত ১১ টার দিকে তাকে সঙ্গে নিয়ে তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে বের হয়। একপর্যায়ে খিলগাঁওয়ের শেখের জায়গায় পৌঁছালে সেখানে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। কিন্তু বেলাল ওই সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন। বেলালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খিলগাও থানার পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়েছে। বেলালের নামে খিলগাঁও থানায় ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ও হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা রয়েছে। তিনি চাপাতি দিয়ে মানুষ কোপাতেন বলে এলাকায় চাপাতি বেলাল হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। তার বাড়ি কুমিল্লায়, তবে থাকতেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায়। তিনি খিলগাঁওয়ের শেখের জায়গাসহ বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা ও ডাকাতি করতেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

জলিল ও বেলালের লাশ নিতে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে যাননি বলে মর্গ সূত্র জানিয়েছে।