দৃঢ় মনোবলে সুস্থ সাতক্ষীরার প্রথম কোভিড-১৯ রোগী

করোনাভাইরামুক্ত হয়েছেন সাতক্ষীরার প্রথম কোভিড–১৯ রোগী ল্যাব টেকনোলজিস্ট মাহমুদুর রহমান (৩২)। ছবি: সংগৃহীত
করোনাভাইরামুক্ত হয়েছেন সাতক্ষীরার প্রথম কোভিড–১৯ রোগী ল্যাব টেকনোলজিস্ট মাহমুদুর রহমান (৩২)। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসমুক্ত হয়েছেন সাতক্ষীরার প্রথম কোভিড–১৯ রোগী মাহমুদুর রহমান (৩২)। তিনি সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়ার বাসিন্দা এবং যশোরের শর্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনোলজিস্ট।

সুস্থ হয়ে সবার উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান বলেন, 'করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জানার পর মনোবল হারালে চলবে না। সুস্থ হয়ে উঠছি—এমন চিন্তা করতে হবে। দৃঢ় মনোবল, সাহস আর স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মেনে চললে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।'

টানা প্রায় তিন সপ্তাহ বাড়িতে আছেন মাহমুদুর রহমান। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত, সাতক্ষীরা সদর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ও চিকিৎসা কর্মকর্তা জয়ন্ত সরকার তাঁকে সুস্থ ঘোষণা করেন। সেই ছাড়পত্র ও খাদ্যসামগ্রী তাঁর হাতে তুলে দেন তাঁরা। এ সময় সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের পক্ষে তাঁকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রী।

মাহমুদুর রহমান বলেন, তিনি শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। সাতক্ষীরা থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুজন স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তাঁর সঙ্গে এক কক্ষে বসে কাজ করেন এমন একজন সহকর্মীর ২৫ এপ্রিল করোনা পজেটিভ আসে। তাঁর বাড়ি যশোরে। ওই দিন তিনি নমুনা পরীক্ষার জন্য দিয়ে সাতক্ষীরায় চলে যান। পরের দিন ২৬ এপ্রিল জানতে পারেন তাঁর করোনা পজেটিভ। তিনি তাঁর বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার কথা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানান।

মাহমুদুর রহমান বলেন, 'গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করেছি। গরম পানির ভাব নিয়েছি। আদা, লবঙ্গ, লেবু দিয়ে গরম চা খেয়েছি। নিজের কাপড়, খাবার প্লেট ও টয়লেট নিজে পরিষ্কার করেছি। স্ত্রী ও সন্তান আমাকে সাহস যুগিয়েছে। এ ছাড়া সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সবাই খোঁজ–খবর নিয়েছেন। সবার সহযোগিতায় আমি সুস্থ হয়ে উঠেছি। আমি এখন কর্মস্থলে যোগ দিতে চাই।' 

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর দুই দফা মাহমুদুরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে প্রথম পরীক্ষায় তাঁর করোনা নেগেটিভ আসে। এরপর আবার পরীক্ষায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানা যায়, তাঁর করোনা নেগেটিভ। তিনি সুস্থ হলেও তাঁকে আরও ১৪ দিন বিশ্রামে থাকতে হবে। এরপর তিনি কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারেন।