টেকনাফে 'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা তরুণ নিহত, ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একজন রোহিঙ্গা তরুণ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিজিবির দুই সদস্য আহত হয়ে বলে জানিয়েছেন বিজিবি।

নিহত যুবকের নাম মোহাম্মদ সাকের (২২)। তিনি উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে এইচ-৬ ব্লকের বাসিন্দা খায়রুল আমিনের ছেলে।

আজ রোববার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।

বিজিবির ভাষ্য অনুযায়ী, নিহত তরুণ একজন মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা বড়ি, একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, দুইটি কার্তুজের খালি খোসা ও একটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান জানান, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া সীমান্ত চৌকির একটি বিশেষ টহলদল বেড়িবাঁধ এলাকায় চোরাচালান বিরোধী টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় দূর থেকে ৩-৪ জন ব্যক্তি নাফনদী পার হয়ে বেড়িবাঁধে উঠতে দেখে টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র ইয়াবা কারবারিরা অতর্কিতভাবে গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবি দুই সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ৪-৫ মিনিটের মতো গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।

ফয়সল হাসান খান আরও বলেন, এক পর্যায়ে ইয়াবা কারবারিরা গুলি করতে করতে পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। গোলাগুলি থামার পর টহলদল ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা বড়ি, একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, দুইটি কার্তুজের খালি খোসা ও একটি ধারালো কিরিচসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক যুবককে উদ্ধার করে। গুলিবিদ্ধ যুবক ও বিজিবির দুই সদস্যকে দ্রুত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাসিম ইকবাল বলেন, সকালের দিকে বিজিবি তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সাধারণ পোশাকে থাকা ওই যুবকের শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পোশাক পরিহিত বিজিবি সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকাল নয়টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, গুলিবিদ্ধ যুবককে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আজ রোববার সকাল পর্যন্ত চার নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮৭ জন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন।