মানবিক কাজের পুরস্কার পেলেন পুলিশ সদস্য রুবেল

ভ্যানে করে মরদেহ নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্য রুবেল। ছবি: সংগৃহীত
ভ্যানে করে মরদেহ নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্য রুবেল। ছবি: সংগৃহীত

এক পথচারীর মৃত্যুর পর ‘করোনা সন্দেহে’ কেউ এগিয়ে আসেনি। পথেই পড়ে ছিল রক্তাক্ত মরদেহ। সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য এগিয়ে আসেন। শুধু তা–ই নয়, তিনি ভ্যান চালিয়ে লাশ থানায় নিয়ে যান। গাজীপুর মহানগরীর সাইনবোর্ড এলাকায় শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

আজ রোববার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন মানবিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) রুবেল মিয়াকে পুরস্কৃত করেছেন।

গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার পুলিশ সদস্য রুবেল মিয়া জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সাইনবোর্ড এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় একজন বয়স্ক লোককে (৬২) রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যান। কাছে গিয়ে দেখতে পান লোকটি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আশপাশে কিছু মানুষ চলাচল করলেও ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সন্দেহে’ কেউ লাশের পাশে আসেননি।

পরে মরদেহ থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি গাড়ি খুঁজতে থাকেন। রাত বেশি হওয়ায় কোনো গাড়ি না পেয়ে একজন ভ্যানচালককে লাশটি থানায় নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু ভ্যানচালক গাড়িতে লাশ না তুলতে হাতে-পায়ে ধরেন। তাঁর অনুরোধ উপেক্ষা করেই লাশটি তিনি একাই ভ্যানে তোলেন। তখন ভ্যানচালক লাশটি বহনে অস্বীকৃতি জানান। এরপর রুবেল নিজেই ভ্যানটি চালিয়ে থানায় নিয়ে যান।

পুলিশ সদস্য রুবেল মিয়া জানান, নিহত লোকটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। লোকটির পরনে ছিল সাদা রঙের হাফ শার্ট ও লুঙ্গি এবং মাথায় ছিল সাদা রঙের টুপি।

করোনাকালে মানবিক এ কাজের খবরটি জানাজানি হলে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন আজ রোববার রুবেলকে তাঁর দপ্তরে ডাকেন। সেখানে মানবিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে পুরস্কৃত করেছেন।

গাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, নিহত ব্যক্তির কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। লাশ বর্তমানে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।