করোনা ছুটিতে শিপিং মাশুল আদায় করা যাবে না

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

করোনা মহামারির সময় কনটেইনারের ক্ষতিপূরণ মাশুল আদায় করতে পারবে না বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলো। গত ২৭ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির সময়ে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ক্ষেত্রে এই মাশুল আদায় করা যাবে না। যারা আদায় করেছে, তা ফেরত দিতে হবে আমদানিকারকদের।

আজ রোববার দুপুরে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে এই নির্দেশ দিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম। এ সময় চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান, বিদেশি শিপিং কোম্পানির প্রতিনিধি ও বন্দর ব্যবহারকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, মহামারির সময়ে দেশের ব্যবসা–বাণিজ্য যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি মানতে হবে।

করোনার সময় আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার বন্দরে রাখার ভাড়ায় ছাড় দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। করোনার সাধারণ ছুটির সময় নানা কারণে দ্রুত পণ্য খালাস করতে না পারায় ছাড়ের এই সুবিধা দিয়েছিল সংস্থাটি। তবে শিপিং কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ মাশুল আদায় করায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন।

আজকের বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংকটের সময়ে দেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের স্বার্থে বন্দর কনটেইনার রাখার ভাড়ায় ছাড় দিয়েছে। এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার মতো ছাড় দেওয়া হয়।

বন্দরে পণ্য খালাস করে খালি কনটেইনার ফেরত দেওয়ার জন্য আমদানিকারকদের নির্ধারিত সময় দেয় শিপিং কোম্পানিগুলো। কোনো আমদানিকারক কত দিন সময় পাবেন, তা পণ্য ক্রয় চুক্তিতে সরবরাহকারী উল্লেখ করে দেন। জাহাজ থেকে নামানোর পর এই সময় সাধারণত ১৪ থেকে ২১ দিন হয়ে থাকে। এই সময়ে আমদানিকারকেরা পণ্য খালাস করে কনটেইনার ফেরত না দিলে প্রতিদিনের জন্য ডেমারেজ বা ডিটেনশন মাশুল দিতে হয় জাহাজ কোম্পানিগুলোকে।

মহামারির সময়ে আমদানিকারকেরা নানা কারণে পণ্য খালাসে দেরি হওয়ায় কনটেইনারের এই মাশুলবাবদ বিপুল পরিমাণ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তর প্রথমে পরামর্শমূলক চিঠি দিয়েছিল বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। তারা তা না মানায় এবার সরাসরি নির্দেশ দেওয়া হলো।

বৈঠকে শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির পরিচালক ক্যাপ্টেন আহমেদ সাহেদ চৌধুরী। তিনি ফোন না ধরায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে সংগঠনটির সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, নৌপরিবহন অধিদপ্তর এ–সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করার পর তা শিপিং কোম্পানিগুলোর মূল কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেবেন তাঁরা।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সংকটের সময়ে এটি সরকারের যুগান্তাকারী সিদ্ধান্ত। বন্দর ছাড় দিয়েছে। শিপিং কোম্পানিগুলোকেও ছাড় দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যবসা–বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত দরকার ছিল।