করোনা মোকাবিলায় তামাকপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যের কর ও দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স-আত্মা, ঢাকা আহ্‌ছানিয়া মিশন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রস্তাবের কথা জানায়।

বিজ্ঞপ্তি তৈরির আগে দেশের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনগুলো। বলেছে, তামাক খাতে সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রবর্তন, সিগারেটে ২টি মূল্যস্তর এবং তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ৩ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করতে হবে। এতে যে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে, তা দিয়ে সরকার নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ মহামারিসংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যয় এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ব্যয় করতে পারবে।

তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধি করলে দীর্ঘ মেয়াদে ৬ লাখ ধূমপায়ীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং প্রায় ২০ লাখ ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে। একই সঙ্গে করোনার মতো যেকোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমবে বলে মনে করে সংগঠনগুলো।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন গবেষণা পর্যালোচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। এই সতর্কতা আমলে নিলে দেশে বর্তমানে প্রায় চার কোটি তামাক ব্যবহারকারী মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এই বাজেট প্রস্তাব সমর্থন করে জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘কোভিড-১৯ বুঝিয়ে দিল সুস্থ থাকার জন্য তামাকপণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কতটা জরুরি। আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাকপণ্যের কর ও দাম বাড়িয়ে তরুণ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশ এখন তরুণদের দেশ। তামাকের মতো স্বাস্থ্য হানিকর পণ্য থেকে তরুণ সমাজকে দূরে রাখতে তামাকপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি জরুরি।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো নাজনীন আহমেদ বলেন, আসন্ন বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর বিলুপ্ত করে দুটি নির্ধারণ করা দরকার। কারণ, একাধিক মূল্যস্তর এবং বিভিন্ন দামে সিগারেট ক্রয়ের সুযোগ থাকায় ভোক্তা স্তর পরিবর্তন করার সুযোগ পায়। ফলে তামাক ব্যবহার হ্রাসে কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করে না।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় তামাক কর সংস্কার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে।