করোনাজয়ী দুই চিকিৎসক কাজে ফেরার অপেক্ষায়

এসএম মাসুদ রানা ও ফাহিম হোসেন।
এসএম মাসুদ রানা ও ফাহিম হোসেন।

করোনা জয় করার পর ফেনীর দুই চিকিৎসকই এখন কাজে ফিরতে আগ্রহী। তবে তাঁদের আরও ১৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে। দুজনই এখন দুই সপ্তাহের হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। গত শুক্রবার তাঁদের তৃতীয় পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।

এই দুই চিকিৎসক হলেন ফেনী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম মাসুদ রানা এবং ফেনী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাহিম হোসেন। তাঁরা দুজনই নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে তাঁকে মার্চ ও এপ্রিল মাসে ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় নানা কাজে যেতে হয়েছে। এ সময় তাঁকে প্রায় ১৫০ জনের নমুনা সংগ্রহের কাজে অংশ নিতে হয়েছে। নিজ কার্যালয়ে বসে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে। নিজ চেম্বারে বসে রোগীও দেখেছেন।

মাসুদ রানা ফেনী জেলার অধিবাসী। পরিবার নিয়ে শহরের ডাক্তার পাড়াতেই বসবাস করেন। আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসাকালীন অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে মাসুদ রানা বলেন, ‘সিভিল সার্জন মো. সাজ্জাদ হোসেন সব সময় সাহস দিয়েছেন। এক দিনের জন্যও মনোবল হারাতে দেননি। আর ফেনী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে ও নিজে চিকিৎসক হিসেবে নিয়মিত ওষুধ খেয়েছি। সব ধরনের নিয়ম মেনে চলেছি।’

মাসুদ রানা জানান, একই ভবনের মধ্যে থেকেও পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়েছিল। স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন ভিডিও কলে। স্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ‘সময়মতো ওষুধ খেয়েছি কি না, সেটা ফোনে তদারক করেছেন।’

সামান্য কাশি হলে গত ৩ মে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতাল পাঠানো হয়। ১০ মে নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরে পড়ে।

অপর দিকে চিকিৎসা কর্মকর্তা ফাহিম হোসেনও ফেনী জেলার অধিবাসী। পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকেন। চাকরির কারণে তাঁকে ফেনীতে সরকারি ডাকবাংলোয় থাকতে হয়। তিনিও উপজেলায় সম্ভাব্য রোগীদের নমুনা সংগ্রহের কাজে অংশ নেন। উল্লেখযোগ্য কোনো উপসর্গ না থাকলেও গত ৩ মে তাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ১০ মে ফলাফল পজিটিভ আসে।

ফাহিম হোসেন বলেন, সিভিল সার্জন ও ফেনী সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সহায়তায় সুস্থ হতে পেরেছেন। কোয়ারেন্টিন শেষে আবার কাজে যোগ দিতে আগ্রহী তিনি।

সিভিল সার্জন সাজ্জাদ হোসেন জানান, ফেনীর দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজ নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। তাঁরা দুজনসহ ফেনীতে পাঁচজন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় আক্রান্ত ব্যক্তি ফেনীর ট্রমা সেন্টারের আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। তৃতীয় জনও বাসায় আইসোলেশনে থেকেই সুস্থ হন।