ঢাকায় করোনায় ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু, এলাকায় লাশ আনতে বাধা

করোনায় সংক্রমিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বাসিন্দা এক ব্যাংক কর্মকর্তার (৫৫) ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার সকালে তিনি মারা যান। এই কর্মকর্তার পরিবার তাঁকে আখাউড়ায় দাফন করতে চাইলেও স্থানীয় ব্যক্তিদের বাধায় কুমিল্লা পর্যন্ত লাশ নিয়ে গিয়ে আবার ঢাকায় ফেরত আসতে হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দরখার ইউনিয়নের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি ঢাকায় একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন এবং সেখানেই বসবাস করতেন। তিনিসহ পরিবারের তিন সদস্যের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ওই ব্যাংক কর্মকর্তা গতকাল দুপুরে ঢাকায় মারা গেলে সন্ধ্যায় তাঁর লাশ নিয়ে আখাউড়ার উদ্দেশে রওনা হন পরিবারের লোকজন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত পরিবারের দুই সদস্যও ছিলেন। এ অবস্থায় উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থা অবলম্বন করেন। লাশ আখাউড়ায় না আনার জন্য স্বজনদের অনুরোধ জানায় প্রশাসন। গতকাল রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রসুল আহমেদ ওই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানতে পারেন যে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ নিয়ে পরিবারের লোকজন কুমিল্লা পর্যন্ত পৌঁছালে সেখানকার পুলিশ তাঁদের বাঁধা দেন। পরে পরিবারের লোকজন লাশ নিয়ে উল্টো ঢাকার পথে রওনা হন। তবে সতর্কতা হিসেবে গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসনের লোকজন সেখানে অবস্থান করেন। গ্রামের লোকজনও সতর্ক ছিলেন।

ওই কর্মকর্তার নিকটাত্মীয় ও জনপ্রতিনিধি জানান, সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে নিয়মরীতি মেনে গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন করতে চেয়েছিলেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তার স্বজনেরা । তবে পুলিশ লাশ নিয়ে আসতে না দেওয়ায় ঢাকাতেই ফিরে যান তাঁরা।

এদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে আখাউড়ার মগড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এক ব্যাংক কর্মকর্তার (৪৭) ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে। ওই কর্মকর্তার নিকটাত্মীয় ও এক জনপ্রতিনিধি জানান, ব্যাংক কর্মকর্তা ঢাকাতেই বসবাস করতেন। তিনি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঢাকাতেই তাঁর দাফন করা হয়।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমেদ জানান, উভয় ব্যাংক কর্মকর্তা ঢাকায় চাকরি এবং সেখানেই বসবাস করতেন। এক কর্মকর্তার পরিবার লাশ নিয়ে গ্রামে আসতে চেয়েছিল, তবে স্থানীয় ব্যক্তিরা এতে বাধা দেন।