চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভের সঙ্গে সন্দেহভাজন রোগীর চিকিৎসা

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

চট্টগ্রামে করোনার উপসর্গ আছে, এ রকম সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য আলাদা চিকিৎসাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা যায়নি দুই মাসেও। ফলে বাধ্য হয়ে জেনারেল হাসপাতালের কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাঁদের। হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডের শয্যা দখল করে রাখছেন এ ধরনের সন্দেহভাজন রোগীরা।

অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ গাইডলাইনে তিন ধরনের চিকিৎসাব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত রোগীদের জন্য রেড জোন, নন কোভিড সাধারণ রোগীদের জন্য গ্রিন জোন এবং করোনা উপসর্গ রয়েছে এ রকম সন্দেহভাজন রোগীদের ইয়েলো জোনে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে।

চট্টগ্রামে গত দুই মাসে করোনা পজিটিভ রোগীদের চিকিৎসার জন্য জেনারেল হাসপাতালে ১১০ ও বিআইটিআইডিতে ৩০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড করা সম্ভব হয়। এর বাইরে বেসরকারি ফিল্ড হাসপাতালে ৫০ শয্যার আইসোলেশন রয়েছে। কিন্তু করোনার উপসর্গ রয়েছে, এ রকম সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য পৃথক কোনো ব্যবস্থা করা যায়নি। অন্য সাধারণ রোগীরা যেকোনো হাসপাতালে ভর্তি হতে পারলেও করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ শয্যার একটি পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড থাকলেও মূলত সেখানে করোনা সন্দেহভাজনদের পাশাপাশি করোনা পজিটিভ রোগীও রাখা হয়। গত রোববার পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা শনাক্ত হয় ৭৮৯ জনের।

তবে সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, সন্দেহভাজন এবং মৃদু উপসর্গ আছে এমন রোগীদের জন্য আলাদা হাসপাতালের প্রক্রিয়া চলছে।

পজিটিভ রোগীর সঙ্গে সন্দেহভাজন রোগী

জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে গতকাল সোমবার মোট রোগী ছিল ১০৯ জন। এর মধ্যে ৯৮ জন করোনা পজিটিভ এবং বাকিরা করোনা সন্দেহভাজন রোগী।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট আবদুর রব বলেন, ‘গাইডলাইন অনুযায়ী আমাদের করোনা পজিটিভ রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার কথা। এখন সন্দেহজনক রোগীও রাখতে হচ্ছে। এতে করে শয্যা দখল হওয়ার পাশাপাশি তারাও ঝুঁকিতে পড়ছে।’

একইভাবে গতকাল সকালে বিআইটিআইডিতে ২৫ জন রোগী ছিল। এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে সন্দেহভাজন রোগী ছিলেন ১১ জন।

চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরু হয় ২৬ মার্চ থেকে। এরপর ৩ এপ্রিল প্রথম চট্টগ্রামে একজন রোগী শনাক্ত হয়। চট্টগ্রামে আক্রান্ত ৭৮৯ জনের মধ্যে ১০০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মারা গেছেন ৩৬ জন।

মৃদু উপসর্গের রোগীর ব্যবস্থা নেই

করোনা শনাক্ত হয়েছে, এমন রোগীর অনেকেরই উপসর্গ মৃদু। তাঁদের বাসায় আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শ্বাসকষ্টের মতো পরিস্থিতি হলে হাসপাতালে যাওয়ার কথা রয়েছে।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটির সমন্বয়ক ও স্বাচিপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ঘরে থেকে সবার চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। একজন পোশাকশ্রমিক কিংবা দিনমজুর তাঁর এক কক্ষের ঘর। তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসা দিতে হবে। এ জন্য মৃদু উপসর্গ যাঁদের, তাঁদের জন্য একটা আলাদা ব্যবস্থা করার কথা শুরু থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু দুই মাসেও তা করা যায়নি।

জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার নাথ বলেন, করোনা রোগীদের মধ্যে যাঁদের উপসর্গ মৃদু, তাঁরা বাড়িতে চিকিৎসা নিতে পারেন। এটা হলে আরও বেশি গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।