করোনা আতঙ্কের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি

উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশ মেঘলা দেখা যাচ্ছে। কখনো ভ্যাপসা গরম, কখনো হচ্ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। একদিকে করোনার আতঙ্ক, তার ওপর ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। তা মোকাবিলায় চলছে প্রস্তুতি।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষায় ইতিমধ্যে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাঠে নেমেছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। তাঁরা উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করছেন। দুর্যোগের আগেই মানুষ যাতে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসেন, সে বিষয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালী। সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর ও দ্বীপ যেখানে আশ্রয়কেন্দ্র নেই, সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে অবস্থানের সময় সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করছেন।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) গলাচিপার টিম লিডার আবুহেনা মু. সোয়েব বলেন, উপজেলায় তাঁদের ২ হাজার ২৫ জন স্বেচ্ছাসেবক আছেন। আম্পান মোকাবিলায় ইতিমধ্যে তাঁরা মাঠে নেমেছেন। দুর্গম এলাকাগুলোতে অবস্থানরত সাধারণ মানুষের জরুরি চলাচলের জন্য নৌযান ও যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব বাহনের মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনসহ ঘূর্ণিঝড়-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (দায়িত্বরত) ও সহকারী কমিশনার মো. মাহাবুবুল রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তাঁরা ২০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। এ ছাড়া নগদ টাকা, শিশুখাদ্য বাবদ ৫ লাখ টাকা, গোখাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দুর্যোগকালীন ও পরবর্তী সময়ে জরুরি খাদ্য শুকনো খাবার হিসেবে ৩ লাখ প্যাকেট বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জেলায় ৭৫০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক দল ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত আছে।