হালদায় ডলফিন হত্যা রোধ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কমিটি করে দিলেন হাইকোর্ট

হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধ, পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যসহ সব ধরনের মা মাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, কমিটিতে হালদা নদী এলাকার সংসদ সদস্যরা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে ১১ মে ওই রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। পরদিন ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। সেদিন আদালত হালদায় আর যাতে ডলফিন শিকার বা হত্যা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ডলফিন শিকার বা হত্যা রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে বিবাদীদের জানাতে বলা হয়। বিষয়টি ১৯ মে আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়।

দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে উচ্চ আদালতে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে শুনানি নিয়ে দেওয়া প্রথম আদেশ এটি।

হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের পাঠানো প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। শুনানি নিয়ে আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার শুনানিতে অংশ নেন। আর ১১ মে ওই রিটটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুল কাউয়ূম।

‘হালদা নদীর ডলফিন হত্যা রোধ, প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং সকল প্রকার মা মাছ রক্ষা কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, হালদা নদীতীরবর্তী এলাকার সংসদ সদস্যরা এই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। কমিটি তাঁদের উপদেশ অনুসারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কমিটির সভাপতি হবেন। কমিটিতে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের প্রতিনিধি থাকবেন। হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, রাউজান, রামগড় ও মানিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক মনোনীত দুজন হালদা গবেষক ও দুজন এনজিও প্রতিনিধি এবং হালদা তীরবর্তী উপজেলা চেয়ারম্যানরা কমিটিতে থাকবেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) কমিটির সদস্যসচিব হবেন। ২৮ মে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।

রিট দায়েরের পর আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ূম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, হালদা নদীতে ইতিমধ্যে ২৪টি ডলফিন মারা গেছে। এর অনেকগুলো হত্যার শিকার বলে হালদা গবেষকদের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। যে কারণে বিপন্নপ্রায় ওই সব ডলফিন রক্ষায় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।