'নো ম্যানস ল্যান্ডে' তিন দিন ধরে পড়ে আছেন তিনি

নওগাঁর সাপাহার সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের অস্ত্রের মুখে সীমান্তে তিন দিন ধরে অবস্থান করা ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত
নওগাঁর সাপাহার সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের অস্ত্রের মুখে সীমান্তে তিন দিন ধরে অবস্থান করা ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার সীমান্তবর্তী কলমুডাঙ্গা মাঠের ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ তিন দিন ধরে অবস্থান করছেন আনুমানিক ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পাল্টাপাল্টি দায় চাপানোয় সীমান্তে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বলছে, ওই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক। বিএসএফ তাঁকে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করলে বিজিবি তা প্রতিহত করে। তবে বিএসএফ ওই ব্যক্তিকে বাংলাদেশি নাগরিক বলে তাঁকে ফেরত নিতে বাধা দেওয়ায় বর্তমানে সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন।

বিজিবি নওগাঁ ব্যাটালিয়ন (১৬ বিজিবি) ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ওই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক। গত রোববার দুপুরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আদাতলা ক্যাম্পের সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে সীমান্তের ২৩৭ নম্বর প্রধান পিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুশইনের চেষ্টা করে। পুশইনের এ ঘটনা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ কলমুডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিএসএফের পুশইনের তৎপরতা প্রতিহত করে। এ ঘটনায় রোববার দুপুর থেকে ওই এলাকায় দুই দেশের অতিরিক্ত সীমান্তরক্ষী বাহিনী অবস্থান নিয়ে আছে।

ওই ব্যক্তি বাংলাভাষী এবং রোববার থেকে তিনি সাহায্যের জন্য আবেদন করে আসছেন। তিন দিন ধরে কিছু না খেতে পেয়ে ওই ব্যক্তি বর্তমানে মরণাপন্ন অবস্থায় খোলা মাঠের মধ্যে পড়ে রয়েছেন। বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে দফায় দফায় পতাকা বৈঠক হলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।

বিজিবি নওগাঁ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম জানান, ওই ব্যক্তি একজন ভারতীয় নাগরিক। তাঁকে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করলে বিজিবি তা প্রতিহত করে। তবে বিএসএফের দাবি, ওই ব্যক্তি ভারতীয় নন, তিনি বাংলাদেশি। তাই বিএসএফ ওই ব্যক্তিকে ফেরত নিতে রাজি হচ্ছে না। ওই ব্যক্তি বর্তমানে সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ভারতের অভ্যন্তরে ২০০ মিটার দূরে অবস্থান করছেন।

আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, বিষয়টি নিরসনের জন্য বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে রোববার ও গতকাল সোমবার পতাকা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আবারও বিএসএফকে আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার সকালে আবারও পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।