জামিন হয়নি ইয়াংসিক লির, হাসপাতালে কেনাকাটায় দুর্নীতির মামলায় দুজন জামিন পাননি

অনলাইন জুয়ার কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সেলিম প্রধানের সহযোগী বিদেশি নাগরিক ইয়াংসিক লি একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়মের অভিযোগে করা মামলায় দুই আসামিও আজ মঙ্গলবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি। তাঁরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সারা দেশের অধস্তন আদালত থেকে আজ বিভিন্ন মামলায় ৪ হাজার ৪২ জন জামিন পেয়েছেন। এ তথ্য জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার সারা দেশের অধস্তন আদালতে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে ৬ হাজার ৫১৬টি জামিন আবেদনের শুনানি ও নিষ্পত্তি হয়। এর মধ্যে অধস্তন আদালতে ৪ হাজার ৪২ জন বন্দির জামিন মঞ্জুর হয়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আদালতেও সাধারণ ছুটি চলছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে অধস্তন আদালতে শুধু জামিনসংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি হচ্ছে। এই কার্যক্রম ১১ মে থেকে শুরু হয়। এ হিসেবে আজ ছিল সপ্তম দিন। এ ছাড়া ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে বিচারকাজ পরিচালনার জন্য হাইকোর্টের পৃথক চারটি বেঞ্চ এবং আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট রয়েছে।

যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়মের মামলায় দুজনের জামিন হয়নি

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়মের অভিযোগে করা মামলায় দুই আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি। আজ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে তাঁদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। তাঁরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, যুক্ত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ।

পরে আইনজীবী শাহীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ২৭ নভেম্বর দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ওই মামলাটি করা হয়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধভাবে প্রাক্কলন ব্যতীত বেশি দামে যন্ত্রপাতি কেনার মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।

জামিন হয়নি ইয়াংসিক লির
অনলাইন জুয়ার কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সেলিম প্রধানের সহযোগী বিদেশি নাগরিক ইয়াংসিক লি একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি। মানি লন্ডারিং আইনে করা ওই মামলায় তাঁর জামিন আবেদনে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ নো অর্ডার দিয়েছেন। ফলে ইয়াংসিক লিকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শরীফ আহমেদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।

পরে বশির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াংসিক লি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক হলেও উত্তর কোরিয়ার নাগরিক পরিচয়ে বাংলাদেশে থাকতেন। অর্থ পাচারের ওই মামলায় লি ৬ নম্বর আসামি। মামলাটি এখন তদন্তাধীন।

অনলাইন জুয়ার কারবারে জড়িত থাকায় সেলিম প্রধানকে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে সেদিন তাঁর ব্যাংককে যাওয়ার কথা ছিল। এরপর গত বছর ২ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে গুলশান থানায় মানি লন্ডারিং আইনে ওই মামলাটি হয়। এই মামলায় তাঁর সহযোগী ইয়াংসিক লিকেও আসামি করা হয়। গত ২২ জানুয়ারি লিকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন লি।