করোনায় আটকে গেছে ৩৮তম বিসিএসের ফল

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের কারণে আটকে গেছে ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলছে, সব ঠিক থাকলে গত মার্চের শেষদিকে ফলাফল প্রকাশ হতো। কিন্তু এ সময় করনোভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় অফিসের কার্যক্রম চালেতে পারেনি পিএসসি। তাই ফল ঝুলে গেছে।

পিএসসি সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। এ সময় পিএসসি দ্রুত চূড়ান্ত ফল প্রকাশের কাজ শুরু করে।এই বিসিএস থেকে বিভিন্ন ক্যাডারে প্রায় ৩০০ পদ বাড়াতে চিঠি দেয় জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়।পিএসসিকে তখন আবার নতুন করে সব কাজ শুরু করতে হয়।

পিএসসির একজন সদস্য বলেন, ৩৮তম বিসিএসের ফলাফলের জন্য সবকিছুই প্রায় গুছিয়ে এনেছিল পিএসসি। কিন্তু করোনার কারণে আটকে গেছে ফলাফল ঘোষণা। এতে আবার দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হতে পারে পরীক্ষার্থীদের।

পিএসসি বলছে, জাতির ক্রান্তিলগ্নে চিকিৎসক এবং নার্স নিয়োগের সুপারিশ করার জন্যই মূলত ঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সুযোগ নেই।

৩৮তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সব প্রস্তুতি শেষ করে দিয়েছে। না হলে আমরা মার্চের শেষ দিকে ফলাফল দিয়ে দিতে পারতাম। এখন অফিস পুরোদমে চালু না হওয়া পর্যন্ত প্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে অনেক আগেই ৩৮তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশ করা হতো। তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহবান জানান।

চেয়ারম্যান জানান, বাস্তবতা সবাইকে মানতে হবে। এখন সরকার কর্তৃক সাধারণ ছুটি। করোনার কারণে পিএসসির স্বাভাবিক সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিএসসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরকারের নির্দেশনায় শুধু চিকিৎসক এবং নার্স নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথেই ৩৮তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

পিএসসি জানায়, ৩৮তম বিসিএসের শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দুজন পরীক্ষক কর্তৃক খাতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করে পিএসসি। মূলত দুজনের মধ্যে নম্বরের হেরফের হলে তৃতীয় পরীক্ষক কর্তৃক খাতা মূল্যায়ন, এ ছাড়াও ৩৮তম বিসিএস চলমান অবস্থায় ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের কার্যক্রম সম্পন্ন, অধিক স্বচ্ছতার জন্য ১২পরীক্ষার্থী নিয়ে ভাইভা বোর্ড গঠন—এসব কারণে এই বিসিএসের ফলাফল প্রকাশে দেরি হয়েছে।

পরীক্ষার্থীরা এই বিসিএসের ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় বেশ উদ্বিগ্ন। তারা বলছেন, এই বিসিএস সম্পন্ন করতে প্রায় তিনবছর লেগে যাচ্ছে।

গত বছরের ২৯ জুলাই থেকে ৩৮তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। গত বছরের ১ জুলাই ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে পাস করেন ৯ হাজার ৮৬২ জন। ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করার কথা ছিল। তবে এখন এই বিসিএসে ১৩৬ জন বেশি নিয়োগ পাবেন। এতে এই বিসিএসে মোট পদের সংখ্যা হচ্ছে ২ হাজার ১৬০ জন। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন।