করোনায় অতিদরিদ্রের ক্ষুধা-কর্মহীনতা দূরীকরণের ওপর গুরুত্ব

সাজেদা ফাউন্ডেশন
সাজেদা ফাউন্ডেশন

কোভিড-১৯ মহামারিকালে সাজেদা ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীর পথবাসী, ঝুপড়িবাসী ও বস্তিবাসী অতিদরিদ্র মানুষের ক্ষুধা, কর্মহীনতা, সহিংসতা দূরীকরণ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়েছে।

উল্লিখিত সমীক্ষা এসব মানুষের ৩টি প্রধান আশঙ্কা যথাক্রমে খাদ্য ও অনাহারে মৃত্যু (৯৫.৫%), আয় ও কর্মহীনতা (৯১%) এবং কোভিড দ্বারা সংক্রমণ হওয়ার (৯১%) বিষয়কে চিহ্নিত করেছে।

সাজেদা ফাউন্ডেশনের 'আরবান পভার্টি টিম' দ্রুত অংশগ্রহণ প্রক্রিয়ায় পথবাসী, ঝুপড়িবাসী ও উন্নয়নবঞ্চিত বস্তিবাসীদের শঙ্কা, পরিবর্তন ও চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সমীক্ষাটি পরিচালনা করে। প্রায়ই এসব জনগোষ্ঠী বিভিন্ন ধরনের সমীক্ষা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাবহির্ভূত থাকে। গবেষণা সমীক্ষাটি পরিচালিত হয় সাজেদা ফাউন্ডেশনের ঢাকা ও চট্টগ্রামের 'আমরাও মানুষ' কর্মসূচির সেবা গ্রহীতা ৫৭২ জন অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে টেলিফোন সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের ৮৮ শতাংশই এ সময় আদৌ কোনো আয় করেন না। এ সময় নারীর তুলনায় (১১%) পুরুষদের কাজ করার হার তুলনামূলক বেশি (১৮%) দেখা গেছে। লকডাউনের কারণে যাঁরা পোশাক কারখানা বা গৃহ পরিষেবার কাজ হারিয়েছেন, সেসব নারীপ্রধান পরিবার বিশেষত একমাত্র উপার্জনকারী নারীর জন্য পরিবার চালানো খুবই কঠিন হয়ে উঠেছে।

ত্রাণ বা বিতরণকৃত খাদ্য অতিদরিদ্র মানুষের চাহিদা মেটাতে পারছে না। বিতরণকৃত খাদ্য পরিবারগুলোর পুষ্টি চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করতে পারছে না। এর ফলে তারা অনিয়মিত বা বিরতি দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।

রমজানে ৯৪ শতাংশ মানুষই সাহরি বা রাত্রিকালীন এক বেলা খেয়ে রোজা রাখতে বাধ্য হন। জরিপে লকডাউনের (অবরুদ্ধকাল) আগে ৭৩ শতাংশ মানুষ দিনে যেখানে তিনবার বা ততধিকবার আহার করতেন, লকডাউনের সময় সেখানে ৯৪ শতাংশ মানুষই দিনে তিনবারের কম খেতে বাধ্য হচ্ছেন।

জরিপে ৫৫ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, লকডাউন তাঁদের প্রতি সহিংসতা বাড়িয়েছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, কোভিডের কারণে নগরে দরিদ্র মানুষদের প্রতি অপবাদ, কোভিড সহিংসতা ও উপহাস করার মাত্রা বেড়েছে। অন্তত ২৬ শতাংশ উত্তরদাতা গত দুই সপ্তাহে কোভিড-সম্পর্কিত নানা উপহাসের মুখোমুখি হয়েছেন।

পারিবারিক সহিংসতাও বেশ বেড়ে যাচ্ছে। ৫১ শতাংশ উত্তরদাতা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহিংসতা বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন। এবং অন্য ২৯ শতাংশ পরিবারের অন্য সদস্যদের দ্বারা সহিংস ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কথা বলেছেন।