বরগুনায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ ফুট উচ্চতায় নদীর পানি

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ছয় থেকে সাত ফুট উচ্চতায় বরগুনার তিনটি নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ছবিটি আজ বুধবার সদর উপজেলার বড়ইতলা ফেরিঘাট থেকে তোলা। ছবি: মোহাম্মদ রফিক
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ছয় থেকে সাত ফুট উচ্চতায় বরগুনার তিনটি নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ছবিটি আজ বুধবার সদর উপজেলার বড়ইতলা ফেরিঘাট থেকে তোলা। ছবি: মোহাম্মদ রফিক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনার তিনটি প্রধান নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৬ থেকে ৭ ফুট পানি বেড়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনার ৬ উপজেলার মধ্যে আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা ও বরগুনার সদরের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব অঞ্চল থেকে প্রশাসন ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ঈদগাহ মাঠ–সংলগ্ন বিষখালী নদীর তীরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় নদীতে অনেক পানি বেড়েছে। আর একটু পানি বাড়লেই তাঁর বাড়ি প্লাবিত হবে।

বরগুনার বাইনচটকি ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, বিষখালী নদীর এই এলাকায় জোয়ারের পানি এতটাই বেড়েছে যে ফেরির গ্যাংওয়েসহ সংযোগ সড়ক তলিয়ে গেছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৬–৭ ফুট বেশি পানি না বাড়লে এমন হয় না এখানে।

বরগুনার তালতলী উপজেলার বগি এলাকার শাহীন বলেন, পায়রা নদীতে বিশাল ঢেউ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে জোয়ারের পানির উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে এই এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে বেশি সময় লাগবে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরগুনা কার্যালয়ের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, আজ সকাল নয়টায় বরগুনায় জোয়ারের উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। এটি বিপৎসীমার সমান সমান। আর এক ঘণ্টার ব্যবধানে সকাল ১০টায় বরগুনায় জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ৩.১০ সেন্টিমিটার হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে বরগুনার প্রধান তিনটি নদীতে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী কায়সার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৬–৭ ফুট বেশি উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। বর্তমানে বরগুনার তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই আমাদের সতর্ক করেছে। বরগুনার প্রধান তিনটি নদীতে জোয়ারের উচ্চতা বাড়ার খবর পেয়েছি। তবে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার খবর পাইনি।'