৪ মাস বেতন বন্ধ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৩৬ কর্মচারীর

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় নতুন সংকট দেখা দিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন। গত চার মাস ধরে তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। এর ফলে তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এই অবস্থায় আজ বুধবার সকালে নগরের কোভিড হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জেনারেল হাসপাতালের আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নেওয়া ৩৬ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের বুঝিয়ে কাজে পাঠানো হয়।

হাসপাতালটির ১০০ শয্যার আইসোলেশন বাড়িয়ে এখন ১৫০ শয্যা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় চতুর্থ শ্রেণির কমর্চারীদের ধর্মঘটের হুমকি নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার নাথ প্রথম আলোকে বলেন, চতুর্থ শ্রেণির আউটসোর্সিং কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তারা আজ সকালে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে ঈদের আগে বেতন ব্যবস্থা করে দেব বলে আশ্বাস দিলে পুনরায় কাজে যোগ দেন। বিষয়টি আমি মন্ত্রী (মহিবুল হাসান চৌধুরী) মহোদয়কে জানিয়েছি।

তিনি বলেন, একেতো হাসপাতালটিতে শয্যা বাড়িয়ে ১৫০ করা হচ্ছে। এখন যদি তারা কাজ না করে তাহলে আমি ঝামেলায় পড়বো। নতুন শয্যার বিষয়ে ডাক্তার নার্সসহ বিভিন্ন লোকবল নিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। তারপরও সেবা দিতে হবে। এটা সংকটময় মুহূর্ত।

জানা গেছে, ৩৬ কর্মচারীকে দিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা নেওয়া, মৃতদেহ সরানো, খাবার সরবরাহ, রান্নায় সহযোগিতা, কোয়ারেন্টিনে থাকা চিকিৎসকদের নাস্তা খাবার পৌঁছে দেওয়াসহ যাবতীয় কাজ করানো হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় জানুয়ারি থেকে সব সরকারি হাসপাতালের মতো জেনারেল হাসপাতালেও আউটসোর্সিংদের জন্য বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়। এর পর সংকট শুরু হয়। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আগে থেকেই চিঠি চালাচালি শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ জন্য প্রতিমাসে চার লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ পাওয়া যেত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী প্রথম আলোকে বলেন, চার পাঁচ মাস বেতন না পেলে আমাদের চলে কীভাবে? সামনে ঈদ। কি করে সংসার চালায় আমরা বলেন? তার ওপর এখন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই ৩৬ জন পর্যাপ্ত নয়। এ জন্য কোভিড হাসপাতাল চালানোর জন্য নতুন করে আরও কয়েকজন কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে চেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু করোনা হাসপাতাল বলে কেউ কাজ করতে আগ্রাহী হচ্ছে না। যদি জরুরি ভিত্তিতে এই ৩৬ জনের বেতন ভাতা ব্যবস্থা করা না যায় তাহলে চরম সংকটে পড়বে হাসপাতালটি।

জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। তাদের সঙ্গে আলাপ করে একটা সমাধানের পথ বের করতে হবে।