মির্জাগঞ্জে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের সময় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। আজ বুধবার সকালে পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলার রাঙ্গাবালীর খালগোড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের সময় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। আজ বুধবার সকালে পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলার রাঙ্গাবালীর খালগোড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আজ বুধবার সকাল থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে, ক্রমেই বাড়ছে দমকা হাওয়া। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হচ্ছে আর আকাশ ধীরে ধীরে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় তিন-চার ফুট উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে।

অধিকাংশ মানুষ সেই ভয়াল সিডরের কথা ভুলতে পারেনি। এখন তাই করোনার ভয় ভুলে এবং কিছুটা অনীহা থাকা সত্ত্বেও গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রমুখী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পায়রা নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীবেষ্টিত মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের সুন্দ্রা কালিকাপুর, ভিকাখালী, রামপুর, কপালভেড়া এবং দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের মেহেন্দীয়াবা, চরখালী, রাণীপুর, কাঁকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ভয়াং ও কাকড়াবুনিয়া গ্রামের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে।

আজ দুপুরে জোয়ারের পানিতে এসব অঞ্চলের বেড়িবাঁধ ছুঁই ছুঁই পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে। পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে এসব অঞ্চলের বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে এসব অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা নদীতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের পানি তিন-চার ফুট উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে। ডুবে গেছে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে। এতে নদী পারাপারে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আজ বুধবার দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা নদীতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের পানি তিন-চার ফুট উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে। ডুবে গেছে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে। এতে নদী পারাপারে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আজ বুধবার দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো

মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম সিকদার জানান, রাতে আম্পানের প্রভাবে ঝুঁকিপূর্ণ সুন্দ্রা, কালিকাপুর, ভিকাখালী, চরকান্দা, পিঁপড়াখালী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলায় সর্বমোট ৫৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৬৮ হাজার ৪০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। তবে গতকাল মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৫০ জন মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। আশ্রিত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শুকনো খাবার এবং নগদ অর্থ মজুত আছে বলেও জানান ইউএনও।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ার সময় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। আজ বুধবার সকালে পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলার রাঙ্গাবালীর খালগোড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জোয়ার সময় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। আজ বুধবার সকালে পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলার রাঙ্গাবালীর খালগোড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

এর আগে দফায় দফায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের কথা জানিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হয়।