ভাড়া না দেওয়ায় ভাড়াটেকে মেরে রক্তাক্ত করল বাড়িওয়ালা

করোনা পরিস্থিতিতে বেকার হয়ে পড়ায় সময়মতো ভাড়া দিতে পারেননি পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার ফুটপাতের পিঠা বিক্রেতা আবদুল হান্নান। মঙ্গলবার এই অভিযোগে হান্নান ও তাঁর দুই ছেলেকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন বাড়িওয়ালা। আহত হান্নান, তাঁর দুই ছেলে আল আমিন ও সাইদুল ইসলামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ বলেছে, পিঠা বিক্রেতাকে মারধরের ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় বাড়িওয়ালা রাজু আহমেদ ও তাঁর ভাতিজা সোহান আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর আজ বুধবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পিঠা বিক্রেতা হান্নান চকবাজার থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, পুরান ঢাকার হোসেনি দালান এলাকার শিয়া গলিতে রাজু আহমেদের বাসায় তিনি পাঁচ বছর ধরে ভাড়া আছেন। প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা বাসা ভাড়া তিনি পরিশোধ করে এসেছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর পিঠা ও ঝালমুড়ি বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এখন প্রতিদিনের খাবার জোটানোই তাঁর জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তিনি গত দুই মাসের ভাড়ার টাকা দিতে পারেননি। মঙ্গলবার বিকেলে নিজের অসহায়ত্বের বিষয়টি উল্লেখ করে ভাড়া দেওয়ার জন্য আরও কয়েক দিন সময় চান হান্নান। তাও না হলে তিনি অগ্রিম হিসেবে যে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন, তা থেকে ভাড়া কেটে নেওয়ার অনুরোধ জানান।

এতে ক্ষিপ্ত হন বাড়ির মালিক রাজু। তিনি ও তাঁর ভাতিজা সোহান মারধর শুরু করেন হান্নানকে। বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাঁর দুই ছেলে আল আমিন ও সাইদুলকে লোহার লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এতে আল আমিনের মাথা ফেটে যায়। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সুযোগে হান্নানের বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেন মালিক। তবে চিকিৎসা নেওয়ার পর পুলিশের সহায়তায় তাঁরা আবারও বাসায় ফেরেন।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার রাজু ও তাঁর ভাতিজা সোহানকে আজ বুধবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন। আবার ভাড়াটের ওপর কোনো অবিচার যেন না হয়, সে ব্যাপারেও খোঁজ রাখছে পুলিশ।