মায়ের রান্না খাবার ফুটপাতে বিতরণ করেন ছেলে

মায়ের সঙ্গে রিদুয়ান ইবনে ছাত্তার।  সংগৃহীত
মায়ের সঙ্গে রিদুয়ান ইবনে ছাত্তার। সংগৃহীত

ভোর থেকেই শুরু হয়ে যায় মা-ছেলের ব্যস্ততা। মাংস, আলু-পেঁয়াজসহ অন্য মসলা কেটেকুটে পরিষ্কার করে দেন ছেলে। তারপর বড় পাতিলে রান্না বসান মা। দুপুরের পরেই সেসব খাবার প্যাকেট করা হয়। শেষে কখনো নিজের মোটরসাইকেল কিংবা অন্যের কাছ থেকে পাওয়া গাড়িতে সেসব খাবার তুলে নিয়ে ছেলে ছোটেন এই ফুটপাত থেকে ওই ফুটপাতে। কোনো দিন ১০০ জন, আবার কোনো দিন ২০০ জনের মুখে উঠছে সেই খাবার।

ছেলে রিদুয়ান ইবনে ছাত্তার পড়েন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে। আর মা রাশেদা শারমিন গৃহিণী। কবে থেকে এই মানবিক উদ্যোগ শুরু করলেন, এমন প্রশ্নে রিদুয়ান ফিরে গেলেন এপ্রিলের শুরুর সেই দিনে। সাধারণ ছুটির ১০ দিন চলছে তখন। একদিন বিবিরহাটের বাসা থেকে মুরাদপুর যাওয়ার পথে দেখেন অসহায় মানুষের দুর্দশা। কোনো আয়রোজগার না থাকায় পরিবহনশ্রমিক, রিকশাওয়ালা, চা–দোকানি, বাদাম বিক্রেতা কিংবা পথশিশুদের সে কী হাহাকার। তাঁদের কষ্ট দেখে মন পোড়ে রিদুয়ানের। তাই বাসায় ফিরেই এসব মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার ইচ্ছার কথা জানান মাকে। রিদুয়ান বলেন, ‘আমার ইচ্ছার কথা বলতেই মা এককথায় বলে উঠলেন শুরু কর। আমিই রান্না করব।’ সেই থেকে শুরু। এ পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ জনের হাতে খাবার তুলে দিয়েছেন রিদুয়ান।

এত মানুষের খাবার রান্না করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে ক্লান্ত হয়ে পড়েন রাশেদা শারমিন। কিন্তু খাবার বিতরণ শেষে ঘরে ফিরে ছেলের মুখে তৃপ্তি হাসি দেখে চলে যায় তাঁর সব ক্লান্তি।