ঝড়ে পাবনায় ১৫৪ কোটি টাকার লিচুর ক্ষতি

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া গ্রামের একটি লিচুবাগান। ১৩ মে। ছবি: প্রথম আলো
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া গ্রামের একটি লিচুবাগান। ১৩ মে। ছবি: প্রথম আলো

পাবনায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে মৌসুমি ফল লিচু ও আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লিচুর জন্য বিখ্যাত জেলার ঈশ্বরদী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২২ শতাংশ লিচু ও ২০ শতাংশ আম ঝরে গেছে। এতে শুধু লিচুতেই ১৫৪ কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে ধারণা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। 

এ ছাড়া ঝড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সবজি, কলা ও আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে কিছু এলাকাতে গাছ উপড়ে ও তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে লিচুর। লিচুর বোঁটা নরম হওয়ায় ঝোড়ো বাতাসে পাকার অপেক্ষায় থাকা প্রায় ২২ শতাংশ লিচু ঝরে পড়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার হিসাব অনুযায়ী শুধু লিচুতেই ১৫৪ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ২০ শতাংশ আম, ১০ শতাংশ সবজি এবং ২৫ শতাংশ জমির কলা নষ্ট হয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীসহ জেলায় প্রায় ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদিত এই লিচুর বাজারমূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। প্রতিটি বাগানে থোকায় থোকায় লিচু এখন পাকার অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান ও গমের আবাদ, সারে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি এবং ১৮০ হেক্টর জমিতে কলার আবাদসহ প্রতিটি উপজেলাতেই প্রচুর আমের চাষ করা হয়েছে।

ক্ষতির এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজাহার আলী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে লিচুর ক্ষতিটিই চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে বোরো ধানের ক্ষতি না হলেও আউশ ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। মাঠপর্যায়ে আম, সবজি, কলাসহ অন্য সব ফসলের ক্ষতি নির্ণয়ের কাজ চলছে। অন্যদিকে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান–পরবর্তী জেলার সার্বিক পরিস্থিতি জানতে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ফল-ফসলের ক্ষতি ছাড়া ঝড়ে তেমন কোনো বড় ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কোনো হতাহতের ঘটনাও নেই। এরপরও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ সাময়িক যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত নিরসনের জন্য কাজ চলছে।