বাগেরহাটে বাঁধ, ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা এলাকায় বলেশ্বর নদ তীরের ভাঙা বাঁধ। আজ সকালে। ছবি: প্রথম আলো
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা এলাকায় বলেশ্বর নদ তীরের ভাঙা বাঁধ। আজ সকালে। ছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মূল আঘাত না এলেও এর তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে। বিশেষ করে বেড়িবাঁধ, মৎস্য ঘের ও বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ি বিধ্বস্তের খবর পাওয়া গেছে।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে আজ ভোর পর্যন্ত জেলা জুড়ে দমকা ও ঝড় হাওয়া বয়ে যায়। রাতের জোয়ারের অতিরিক্ত চাপ বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে জেলা সদর এবং উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলার বিভিন্ন এলাকায়। তবে জেলার কোথাও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ঝড়ের সঙ্গে জোয়ারের চাপে বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হওয়ায় ভেসে গেছে কয়েক হাজার ঘেরে মাছ। ক্ষতি হয়েছে সবজিরও। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছে।

ঝড়ের সময় বুধবার রাতে বলেশ্বর নদ তীরের বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ৩৫/১ পোল্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ বগী-গাবতলার দুই কিলোমিটার অংশের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে বাঁধের আশপাশের কয়েকটি গ্রামের নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে সহস্রাধিক মৎস্য ঘের। উপজেলায় শতাধিক কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্তের খবর পাওয়া গেছে। উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে বহু গাছপালা।

বাগেরহাট সদরে ভৈরব ও দড়াটানা নদী তীরের অন্তত ৪টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙেছে। প্লাবিত হয়েছে গ্রাম, মাঠ, মৎস্য ঘের।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা, গোপালপাঠী ও ভদ্রপাড়া এলাকায় নদী তীরের তিন স্থানে এবং বিষ্ণুপুর এলাকায় কয়েকটি এস্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। ঝড়ের সময় অতিরিক্ত জোয়ারের তোড়ে ভেঙে যাওয়া এসব বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু এলাকায় মানুষ পানিবন্দী আছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ করছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদুজ্জামান খান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রিং বেড়িবাঁধ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা খালেদ কনক বলেন, তারা মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা করছে। ঘেরগুলো ভেসে যাওয়ায় চাষিদের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঝড়ের আগেই উপকূলের অধিকাংশ মানুষকে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিলাম। কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে ও উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ঘেরগুলো ভেসে গেছে। কিছু এলাকায় লবণ পানি প্রবেশ করেছে। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’